শিরোনাম
◈ বিদ্যুৎ আমদানিতে আদানির ৪০ কোটি ডলারের ‘শুল্ক ফাঁকির’ অনুসন্ধানে দুদক ◈ হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের জামিন ◈ আবারও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি ◈ আজ গভীর রা‌তে বা‌র্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মু‌খোমু‌খি ◈ প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা ◈ বড় সুখবর দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য ◈ টি-টোয়েন্টি সি‌রিজ খেল‌তে পাকিস্তানে যাচ্ছে বাংলাদেশ ◈ আমার স্বামী চায় আমি খোলামেলা জামা পরি: মডেল পিয়া বিপাশা ◈ বিচারকাজে বাধা ও হুমকি: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ◈ ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ঘর হস্তান্তর: সেনাবাহিনীর দক্ষতায় অর্ধেক খরচে সফল বাস্তবায়ন

প্রকাশিত : ০৯ জুলাই, ২০২৪, ০৮:১৩ রাত
আপডেট : ০৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৫০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক আবেদ আলী, পিএসসিতে ভুয়া ঠিকানায় চাকরি নেন

মাসুদ আলম: [২] বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। ঢাকায় তার একটি ছয়তলা বাড়ি, তিনটি ফ্ল্যাট ও একটি গাড়ি রয়েছে। গ্রামের বাড়িতে ডুপ্লেক্স বাড়ি, শত বিঘা জমি, মার্কেট, বাগান বাড়ি রয়েছে। হতদরিদ্র পরিবারের জন্ম নেওয়া আবেদ আলী চাকরি নেওয়ার পর যেন আলাদীনের চেরাগ পেয়ে যান। 

[৩] জানা গেছে, মিরপুর থানার পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ওয়াসা রোডে বিসমিল্লাহ টাওয়ারে সপরিবার আবেদ আলী থাকেন। ভবনটিতে আবেদ আলীর পাঁচটি ফ্ল্যাট ছিল। কয়েক মাস আগে দুটি ফ্ল্যাট তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন রয়েছে তিনটি। পাইকপাড়ায় তার একটি ছয়তলা বাড়ি রয়েছে। ব্যাংকে তার নগদ টাকা রয়েছে।

[৪] এদিকে সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী পিএসসিতে ১৯৯৭ সালে চাকরি নিয়েছিলেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের  ঠিকানা ব্যবহার করে। ২০১২ সালের শেষদিকে তিনি চেয়ারম্যানের গাড়িচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। এ ছাড়া ২০১৪ সালে নন-ক্যাডারের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পিএসসির চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

[৫] স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবেদ আলী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় মারা যান তার বাবা আব্দুর রহমান। এরপর জীবিকার তাগিদে আবেদ আলী ঢাকায় চলে যান। সেখানে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এলাকার শাহিন নামে একজনের মাধ্যমে পিএসসিতে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি হওয়ার পরে আবেদ আলী যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান। চাকরি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে তিনি মাদারীপুরের খাখদি এলাকার হাবিবুর রহমান খানের মেয়ে শিল্পী বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ে করার পরে আবেদ আলী তার দুই ভাই সৈয়দ জাবেদ আলী, সৈয়দ সাবেদ আলী ও বোন মোহরজানের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

[৬] আবেদ আলী এমন বিলাসবহুল জীবন যাপন করলেও তার আপন দুই ভাই এখনো থাকেন টিনের ভাঙা ঘরে। গ্রামে কৃষি কাজ ও অটোরিকশা চালিয়ে তাদের করতে হয় জীবিকা নির্বাহ। আবেদ আলী ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে কয়েক বছর আগে নিজ এরাকা ডাসার  এসে মসজিদ নির্মাণসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান করে বেশ পরিচিতি অর্জন করেন। এরপর এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে একটি ডেইরি ফার্ম করতে ডাসার ইউনিয়নের কমলাপুর বাজার সংলগ্ন বড় ব্রিজের কাছে সরকারি খালসহ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জমি দখল করেন। ওই জমিতে তিনি শতাধিক গরু পালন করা যায় এমনভাবে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন। 

[৭]  জানা গেছে, দুই বছর আগে থেকে আবেদ আলী মাদারীপুরের ডাসারে তার নিজ এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন। তিনি নতুন উপজেলা ডাসার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন। এই নির্বাচনের তফসিল এখনো হয়নি। তবে তিনি প্রার্থী হতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছেন। এলাকায় তিনি দামি গাড়িতে চড়ে গণসংযোগ করতেন।

[৮] কুয়াকাটা সান  মেরিনা হোটেলের নিজের বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালান আবেদ আলী ও তার ছেলে সিয়াম। সান  মেরিনা  হোটেলটি এখনও নির্মিত হয়নি। এখানের জায়গা খালি পড়ে রয়েছে। সামনের অংশে রয়েছে ৬-৭টি  লেবার  শেড। 

[৯] হোটেলটির মালিক  মোশারফ  হোসেন বলেন, গত দুই-তিন মাস আগে আবেদ আলী আমার  হোটেলটির সামনে অপর একটি  হোটেলে এসে উঠেন। পরদিন সকালবেলা আমার  হোটেলের জায়গায় গিয়ে শেয়ার ক্রয় করবেন বলে জানায়। তখন  সে আমার  লোকের কাছ  থেকে  শেয়ার ক্রয়ের বিস্তারিত  জেনে যায়। আমি কখনও তাকে  দেখিনি এবং চিনিওনা। আবেদ আলীকে একজন টাউট প্রকৃতির  লোক বলে মনে হয়েছে। এবিষয়ে আমি ঢাকার গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।

[১০] জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী সিআইডির কর্মকর্তাদের বলেন, গত বছরের শেষের দিকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ৩ হাজার ১০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের অনেকের কাছে ফাঁস করা প্রশ্ন বিক্রি করেছেন এবং তাদের চাকরিও হয়েছে। তিনি র্দীঘদিন ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। 

[১১] সিআইডির একটি সূত্র জানায়, উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির দুজনই চাকরির প্রস্তুতির কোচিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বিষয়টি পিএসসির অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীই জানেন। ঢাকার মালিবাগের জ্যোতি কমার্শিয়াল চাকরির কোচিং সেন্টারের পরিচালক আবু জাফর। কোচিং সেন্টারটি তার স্ত্রী জ্যোতির নামে। এ ছাড়া মো. আলমগীর কবিরের কোচিং সেন্টার আছে ঢাকার মিরপুরে। সম্পাদনা: এম খান

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়