শিরোনাম
◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে জামায়াতের কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল ◈ স্ত্রী আসলেই নারী কি না প্রমাণ দেবেন ম্যাখোঁ ◈ আগামী বছরের বইমেলার সময় পরিবর্তন ◈ সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা জানালো ভারত ◈ সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর: অবসরে বাড়ছে সুযোগ-সুবিধা, কমছে অপেক্ষাকাল ◈ আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকসহ আহত ৫

প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০২৩, ০৫:৫৮ বিকাল
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০২৩, ০৬:২০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গাজীপুরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নামছে

এ এইচ সবুজ, গাজীপুর: শিল্পকারখানার বিষাক্ত তরলবর্জ্য, পয়োবর্জ্য ও গৃহস্থালি  বর্জ্যে বিপজ্জনক দূষণে গাজীপুরের প্রাকৃতিক জলাশয়ের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী। জেলার তুরাগ, বালু ও চিলাই নদীসহ উন্মোক্ত জলাশয়গুলোতে মাছ ও জলজপ্রাণি বিলুপ্তির পথে।

আবার ভূগর্ভস্থ বিশুদ্ধ পানি উত্তোলন করে শিল্পকারখানায় ব্যবহারে রাসায়নিক মিশ্রিত কালো পানিতে অস্তিত্ব সংকটে নদী ও খাল। আর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নামায় নিরাপদ পানির সঙ্কটের মধ্যেই আজ আন্তর্জাতিক পানি দিবস পালিত হচ্ছে। 

সম্প্রতি নদ-নদী পর্যবেক্ষণে গিয়ে দেখা গেছে, শিল্পকারখানার বিষাক্ত তরলবর্জ্যে দূষিত গাজীপুরের প্রাকৃতিক জলাশয়ের পানির উৎকট দুর্গন্ধে ধমবন্ধ হয়ে আসে। দূষণ বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছায় জলাশয়ের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী। মৎস্য ও জলজ প্রাণীর বিলুপ্তিসহ জেলার নদ-নদী আজ মৃতপ্রায়। টঙ্গী, গাজীপুর এলাকার পয়োবর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য, শিল্পকারখানার তরলবর্জ্য দূষণের অন্যতম কারণ। পানির প্রয়োজন মেটাতে নির্বিচারে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে।

ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবছর ৪/৫ ফুট করে নীচে নেমে যাচ্ছে। নদী দূষণমুক্ত ও পানিপ্রবাহ বাড়ানো না গেলে এবং বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে পানির অভাবে গাজীপুর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এই অবস্থার উত্তরণে এখনই সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরী। অপরিশোধিত বর্জ্য ও শিল্পকারখানার বর্জ্যসহ নদীতে পড়ছে। ঢাকা মহানগর ও আশপাশের এলাকার গৃহস্থালি বর্জ্য, শিল্পকারখানার বর্জ্যও নালা-নর্দমা, খাল ও জলাভূমি হয়ে নদীতে পড়ছে।

মঙ্গলবার পানি নিরাপদ রাখার কাজে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

দায়িত্বশীলরা মনে করছেন, নিরাপদ পানির অধিকার আছে সবার। মানুষের জীবন বাঁচাতে জলের জীবন সুরক্ষা নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে। গাজীপুরের নদ-নদীর পানি মারাত্মক দূষণে এখন বিপজ্জনক, পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন শূন্যের কোঠায়। একদিকে প্রাকৃতিক জলাশয়ের পানি ব্যবহার অনুপযোগী অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নামায় সঙ্কট বাড়ছে।

গাজীপুরে শিল্পকারখানার বিষাক্ত তরলবর্জ্যে তুরাগ, বালুনদীসহ জলাশয়ে মাছ ও জলজপ্রাণির অস্তিত্ব অনেকটাই সঙ্কটে বলে গাজীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. কায়সার মুহাম্মদ মঈনুল হাসান জানান। জেলায় মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার ৬৫ভাগ চাষ থেকে আর প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে ৩৪ভাগ আসার কথা থাকলেও দূষণের কারণে কম আসছে।

বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিক জলাশয়ে কিছু মাছ থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে দূষণের মাত্রা বেশী হওয়ায় তুরাগ, বালু সহ নদীগুলোতে মাছ থাকতে পারে না। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আলমগীর মিয়া বলেন, ভবিষ্যতে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট এড়াতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিশোধন ছাড়া শিল্পকারখানার তরলবর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। পানির স্তর নীচে নামার কারণে বৃষ্টির পারি সংরক্ষণ ব্যবস্থা করতে হবে। 

চিলাই নদী বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক অ্যাড. মো: জালাল উদ্দিন বলেন, আমরা দূষণ ও দখল রোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা এবং প্রশাসনকে অবহিত কার্যক্রম করে থাকি। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ ছাড়া জলাভূমির জীববৈচিত্র ও প্রতিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব না।

বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের চেয়ারম্যান মো: মনির হোসেন বলেন, পয়োবর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য, শিল্পকারখানার তরলবর্জ্য প্রাকৃতিক জলাশয় দূষণের অন্যতম কারণ। কলকারখানাগুলো ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের পর ব্যবহার শেষে দূষিত তরলবর্জ্য হিসেবে নদীতে ফেলছে। এতে করে নিরাপদ বিশুদ্ধ পানির উৎসস্থল নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ সহ শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান। 

দূষণ রোধে পদক্ষেপ জানতে পরিবেশ অধিদপ্তর গাজীপুরের উপপরিচালক মো: নয়ন মিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

প্রতিনিধি/জেএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়