শেখ দিদার, চট্টগ্রাম: উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালককে মারধর ও কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় তালিকাভুক্ত ১০ ঠিকাদারের ১২ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছেন বলে জানিয়েছেন জনসংযোগ ও প্রটৌকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ।
প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি সাহাব উদ্দিনের মালিকানাধীন মাহমুদা বিল্ডার্স ও এস জে ট্রেডার্স, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সঞ্জয় ভৌমিক কংকনের বাংলাদেশ ট্রেডার্স, মোহাম্মদ ফেরদৌসের মাসুদ এন্টারপ্রাইজ, সুভাষ মজুমদারের জয় ট্রেডার্স, হাবিব উল্লা খানের খান করপোরেশন, নাজিম উদ্দিনের নাজিম এন্ড ব্রাদার্স, নাজমুল হোসেনের রাকিব এন্টারপ্রাইজ, মো. ইউসুফের ইফতেখার এন্ড ব্রাদার্স, আশীষ কুমার দে’র জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ ও দীপা এন্টারপ্রাইজ এবং মো. আলমগীরের তানজিল এন্টারপ্রাইজ।
চসিকের দাফতরিক আদেশে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালক মো. গোলাম ইয়াজদানীর ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা চসিকে ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে জড়িত।
প্রকল্প পরিচালকের ওপর হামলার ঘটনায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনের ৬৪ (৫) ধারা, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধি ১২৭ (১) ক এবং ১২৭ (২) ঘ অনুযায়ী অভিযুক্তদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
গত ২৮ জানুয়ারি বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী ভবনের চতুর্থ তলায় নিজ কার্যালয়ে হামলার শিকার হন প্রকল্প পরিচালক মো. গোলাম ইয়াজদানি। তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী। অবকাঠামো উন্নয়নে চসিকের ২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সরকার অনুমোদন দেয়ার পর ইয়াজদানিকে এর পরিচালক (পিডি) করে চসিকে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রকল্পের আওতায় গত ডিসেম্বরে ২২০ কোটি টাকার ৩৭টি উন্নয়ন কাজ তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ভাগ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রকল্প পরিচালকের কক্ষে ঢুকে ভাংচুরের পাশাপাশি তাকে বেধড়ক পেটান একদল ঠিকাদার। নাজিম, সুভাষ, সাহাব উদ্দিন, সঞ্জয় ভৌমিক কংকন, হাবিব ও মোহাম্মদ ফেরদৌসের নেতৃত্বে অন্তত ১০ থেকে ১২ জন ঠিকাদার হামলা চালান বলে অভিযোগ করেছিলেন ইয়াজদানি।
প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনায় সেদিনই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে নগরীর খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই মামলায় এ পর্যন্ত পাঁচ ঠিকাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন- সঞ্জয় ভৌমিক কংকন, সুভাষ দে, মো. ফিরোজ, মাহমুদুল্লাহ ও সাহাব উদ্দিন।
প্রতিনিধি/জেএ