রিংকু রায়, (নেত্রকোণা) মোহনগঞ্জ : নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ পৌর শহরের মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বাঁধার কারণে ১নং মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত নান্দনিক গেইটটি ৬ মাসেও কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদার।
মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারীর ভিতরে ওই বিদ্যালয়টি অবস্থিত। জানা যায়, মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারীর ভিতরে ৩৩ শতাংশ জায়গা ১নং মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে রেজিষ্ট্রি করে দেয়।
মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬ জানুয়ারি, ২০১২ইং তারিখে ম্যানেজিং কমিটির এক সভায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মৃণালিনী বিশ্বাসের উপস্থিতিতে এবং সর্বসম্মতিক্রমে ওই গেইট নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ১নং মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নান্দনিক গেইট ও বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের জন্য প্রায় ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন সরকার।
তারমধ্যে ১৯ ফুট ৪ ইঞ্চি নান্দনিক গেইটটির জন্য ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। সকল কাজই এম.এস মায়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি লোকাল প্রতিষ্ঠান পায়। জানা যায়, এ বছরের ৫ মে নান্দনিক গেইট ও বাউন্ডারী ওয়ালের জন্য ঠিকাদারের সাথে চুক্তিনামা স্বাক্ষর হয়। পরবর্তীতে বাউন্ডারী ওয়ালের কাজ ৭০ ভাগ শেষ করার পর নান্দনিক গেইটের অনুমতি না দেয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখেছেন।
মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে নান্দনিক গেইট নির্মাণের কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না এবং ৩০ ভাগ বাউন্ডারী ওয়ালের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। ১নং মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গেইটটি করতে বাধা দেওয়ায় আমি স্কুলের জায়গা মাপার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করেছি।
মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোতাহার হোসেন বলেন, একই বাউন্ডারীর মধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণে আরেকটি গেইট তৈরির অনুমতি আমি দিতে পারি না। আমি বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ময়মনসিংহ অঞ্চলকে অবহিত করেছি।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার বিশ্বাজিৎ সাহা ও উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সোয়াইব ইমরান বলেন, আমরা দুজনে সরেজমিনে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিষয়টি সমাধান করতে পারিনি।
সরকারি জায়গায় সরকারি কাজ করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। যদি দ্রুত এর সমাধান না হয় তাহলে নান্দনিক গেইটের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত যাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ডেকে আনলে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে অনুমতি দেয়া যাচ্ছে না বলে প্রধান শিক্ষক আমাকে অবহিত করেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপপরিচালক আবু নূর মোঃ আনিসুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আমাকে মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোতাহার হোসেন ১নং মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নান্দনিক গেইটের বিষয়টি অবহিত করেছেন। যেহেতু আগের রেজুলেশন রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা যেতে পারে। নতুবা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্তের জন্য লিখিত আবেদন করতে পারেন।
প্রতিনিধি/জেএ
আপনার মতামত লিখুন :