সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় সরকারি ঘোষিত ১২ দফা বিধিনিষেধ মেনে দ্বীপে ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন পর্যটকরা। এসব শর্ত পূরণ করে দুই মাসের জন্য রাতযাপনেরও অনুমতি পেয়েছেন ভ্রমণকারীরা। এতে দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে আবারও প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটিতে।
জাহাজ মালিক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, ১ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিনই কক্সবাজার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে নিয়মিত ২–৩টি জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাতায়াত করছে। মঙ্গলবার প্রায় দুই হাজার যাত্রী নিয়ে মোট পাঁচটি জাহাজ দ্বীপে গেছে। এগুলো হলো—কর্ণফুলী, কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ, বে ক্রুজ ও দরবারে কুতুবদিয়া।
দ্বীপের সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল আলম বলেন, “গত এক সপ্তাহে সেন্টমার্টিনের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। হোটেল, রেস্তোরা, দোকানপাট—সবখানেই সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। এতে সন্তুষ্ট দ্বীপবাসী ও পর্যটকরা।”
এদিকে জানা গেছে, পরিবেশ সুরক্ষা ও উন্নয়নের নামে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্যাকেজে উন্নয়ন কাজ চলছে। গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এসব প্রকল্প চলতি ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে দ্বীপবাসীসহ সচেতন মহলের অভিযোগ, পরিবেশ রক্ষার অজুহাতে দীর্ঘদিন পর্যটন সীমিত করে রাখায় সেন্টমার্টিনের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে। তারা মনে করেন, “এখন যেভাবে নিয়ন্ত্রিতভাবে পর্যটক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, চাইলে আগেই তা করা যেত। বন ও পরিবেশ উপদেষ্টার একগুঁয়েমীর কারণেই দ্বীপবাসী দীর্ঘদিন দুশ্চিন্তায় ছিল।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইনামুল হাফিজ নাদিম বলেন, “সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ নজরদারিতে আছি। পাশাপাশি সরকারি বিধিনিষেধ যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কি না—সেটি পর্যবেক্ষণে প্রতিদিন একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।”
দীর্ঘ অবরুদ্ধতার পর নিয়ন্ত্রিত পর্যটন চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে দ্বীপের বাসিন্দাদের মাঝে। ডিসেম্বর জুড়ে পর্যটক প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের।
সূত্র: ইনকিলাব