শিরোনাম
◈ বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে তিন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত, সম্পর্কের প্রভাব নিয়ে নতুন প্রশ্ন ◈ সেনাপ্রধানকে নিয়ে অপপ্রচার, সতর্ক করল আইএসপিআর ◈ জাতির প্রকৃত শক্তি শুধু সম্পদের মধ্যেই নয়: প্রধান উপদেষ্টা ◈ গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন শিগগিরই: ট্রাম্প ◈ জুলাই বিপ্লবের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পাইনি — উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (ভিডিও) ◈ ক্ষুদ্র ইন্টারনেট অপারেটরদের বাজার থেকে হটাতে ডিডস আক্রমণ চলছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ◈ হিন্দুদের কারো কারো ‘জামায়াতে যোগ দেওয়ার’ কারণ কী, তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ আছে? ◈ বাংলা‌দেশ‌কে হা‌রি‌য়ে সি‌রি‌জে ২-১ এ এ‌গি‌য়ে গে‌লো আফগা‌নিস্তান ◈ গণতন্ত্র ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে, ৭ নভেম্বরের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ হংকং সি‌ক্সেস ক্রিকে‌টে শ্রীলঙ্কা‌কে ১৪ রা‌নে হারা‌লো বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:২৬ বিকাল
আপডেট : ০৭ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:২১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পপি বীজ কি, কেন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ এই গাছ ও কোথায় বেশি চাষ হয়

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পপি গাছের চাষ হয় মায়ানমারে। অন্য দেশগুলোর মধ্যে আছে আফগানিস্তান। তালেবান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটিতে চাষ কমেছে, বেড়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে। চট্টগ্রাম বন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৩২ হাজার ১৬০ কেজি ‘পাখির খাদ্য’ আনা হয়েছে, এর মধ্যে ২৪ হাজার ৯৬০ কেজিই পপি বীজ।

পপি গাছের বৈজ্ঞানিক নাম পাপাভের সোমনিফেরাম। এর ফুল সাদা ও গোলাপি রঙের। তাজা অবস্থায় এই ফুলের রস থেকে তৈরি হয় আফিম ও তেল। নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যবহারে যা ব্যাথানাশকেও কাজে লাগে। ফুলের শুকনো দানাকে বলা হয় পপি বীজ। আরও শুকানোর পর এই বীজে তরলের উপস্থিতি যখন একেবারেই কমে যায় তখন সেটি পোস্তদানা হিসেবে ব্যবহার হয়।

বাংলাদেশে পপি গাছ কিংবা অঙ্কুরোদগমের উপযোগী (যে বীজ থেকে চারা জন্মাতে পারে) পপি বীজ নিষিদ্ধ। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, পাকিস্তান থেকে আসা ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি পপি বীজ অঙ্কুরোদগমের উপযোগী। তাই এগুলো জব্দ করা হয়েছে।

প্রশ্ন হালো, বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও পপি গাছ ও অঙ্কুরোদগম উপযোগী বীজ নিষিদ্ধ কেন? পাকিস্তান থেকে আনা বীজগুলো কি আসলেই অঙ্কুরোদগম উপযোগী? দেশে কি এর চাষ হয়? দক্ষিণ এশিয়ায় চাষ হলেও এর চাহিদা ইউরোপে বেশি কেন?

পপির ব্যবহার

পপি কী কাজে লাগে তা নিয়ে একটি নিবন্ধ আছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমি ‘দ্য রয়াল সোসাইটির’ ওয়েবসাইটে। আফিম ও হেরোইন তৈরি হয় বিধায় এটি কারও কারও কাছে আফিম গাছ নামেও পরিচিত। ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ও কুখ্যাত উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোর একটি এটি। উদ্ভিদটির দুধের মতো ঘন ও সাদা রসে প্রচুর পরিমাণে মরফিন (ব্যাথানাশক), কোডিন (কম শক্তিশালী ব্যাথানাশক) ও নস্কাপিনের (কাশির জন্য উপকারী) উপাদান আছে। তবে এর ব্যবহারের মাত্রা নির্ভর করে সহনশীলতা ও আসক্তির ওপর। সহনশীল মাত্রায় ব্যবহার উপকারী হলেও অতিরিক্ত মাত্রায় নেশা তৈরি হয়।

চলতি বছরের মে মাসে প্রকাশিত নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, গত আড়াই হাজার বছর ধরে দুই ভাবেই পপি ফুলের রস ব্যবহার হয়েছে। কিছু দেশে এর বীজ থেকে পোস্তদানা রুটি ও তেলও তৈরি হয়। ফলে নির্দিষ্ট কিছু কারণে নিষিদ্ধ হলেও এর চাষও অব্যাহত আছে। বিশ্বে আনুমানিক ২৭ হাজার ৭৭৩ হেক্টর জমিতে পোস্তদানা উৎপাদনের জন্য বৈধভাবে পপির চাষ হয়। ২০২২ সাল পর্য‌ন্ত অবৈধভাবে (আফিমের জন্য) চাষ হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে।

বাংলাদেশে কেন নিষিদ্ধ

মাদকের সম্ভাব্য উৎস্য বিবেচনায় বাংলাদেশে পপি গাছ, ফল ও এর অঙ্কুরোদগম বীজ নিষিদ্ধ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮-তে পপি গাছ ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই শ্রেণির অন্য মাদকগুলোর মধ্যে আছে, পপি ফল, পপি বীজ (অঙ্কুরোদগম উপযোগী) ও কোকো গাছ। একই কারণে পপি বীজ ও পোস্তদানা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সরকারের ট্রেড পোর্টাল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পপি বীজ কিংবা মসলা হিসেবে পোস্তদানা আমদানি করাও অবৈধ।

পাকিস্তান কি রপ্তানি করতে পারে?

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের গত সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানে পপি চাষ নিষিদ্ধ। কিন্তু তিন বছর আগে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার এর চাষ নিষিদ্ধ করার পর পাকিস্তান বিশ্বে আফিম সরবরাহের অন্যতম প্রধান দেশ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, চলতি বছর দেশটিতে আফিম উৎপাদনের পরিমাণ আগের তুলনায় বেড়েছে।

বেলুচিস্তানের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, চাষ বেড়ে যাওয়ায় প্রদেশটি আফিম উৎপাদনের একটি বড় কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া, আফিম চাষে লাভবান হয়ে অনেক সশস্ত্র গোষ্ঠীও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হতে পারে। এর ফলস্বরূপ আঞ্চলিক অশান্তি ও মাদকাসক্তির বিস্তার বিশ্বে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ডেভিড ম্যান্সফিল্ড ও জিওস্প্যাটিয়াল কোম্পানি আলসিসের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের দুটি ছোট এলাকাতেই ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমি জুড়ে আফিম চাষ করা হচ্ছে। ধারণার ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তালেবান আফিম চাষ নিষিদ্ধ করায় আফগানিস্তানে অনেকে কাজ হারিয়েছেন। জীবিকার তাগিদে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তাদের অনেকে পাকিস্তানে গিয়ে আফিম চাষে জড়িয়েছেন।

পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যেসব দেশে বৈধভাবে আফিম বা পপি চাষ হয় সেখান থেকে আমদানি করা যাবে। এই বীজ কেবল নিবন্ধিত রপ্তানিকারকরা অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারবে। এছাড়া, রপ্তানি করতে হলে আমদানিকারক দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমোদনপত্রও থাকতে হবে।

চট্টগ্রামে যারা আমদানি করেছে

পাকিস্তান থেকে দুটি কনটেইনারে (৩২ হাজার ১৬০ কেজি) করে ‘পপি বীজ’ আমদানি করেছে চট্টগ্রামের কোরবানিগঞ্জের মেসার্স আদিব ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম কাস্টমসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চালানটি গত ৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরে নামানো হয়। এরপর খালাসের জন্য বেসরকারি ডিপো ছাবের আহম্মেদ টিম্বার কোম্পানি লিমিটেডে নেওয়া হয়।

কিন্তু গোয়েন্দাদের কাছে থেকে তথ‍্য পেয়ে চালানটির খালাস স্থগিত করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। তারা এটি পরীক্ষার উদ্যোগ নেন। ২২ অক্টোবর কনটেইনার দুটি খোলা হয়। পণ্যের দুই ধরনের নমুনা পাঠানো হয় তিনটি পরীক্ষাগারে। এগুলো হলো চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। পরীক্ষার পর দুটি নমুনার মধ্যে একটি (২৪,৯৬০ কেজি) পপি বীজ হিসেবে শনাক্ত হয়, বাকিটা পাখির খাদ্য।

আমদানির নথিতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৩২ হাজার কেজি বীজকেই পাখির খাদ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আমদানিকারক মেসার্স আদিব ট্রেডিং-এর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম পাওয়া যায়নি।

নমুনা বিশ্লেষকদের দুই রকম তথ্য

কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষার পর তিনটি ল্যাবের দুটি থেকে নমুনাকে পপি বীজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র ও খুলনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বৃহস্পতিবার রাতে সমকালকে বলেছেন, পপি বীজগুলোতে অঙ্কুরোদগমের উপযোগিতা আছে।

অপরদিকে নমুনাগুলো পপি বীজ নয় বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার। এর পরিচালক অধ্যাপক আবু বিন হাসান সুসান বলেন, গত সপ্তাহের শুরুতে তারা নমুনা পান। এরপর ‘টিজি-ডিটিএ’ নামের অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করেন। ফলাফলে দেখা গেছে, বীজগুলোতে ওয়েল লিকুইডের মাত্রা ২-৬ শতাংশের মতো। অঙ্কুরোদগমের উপযোগী হতে হলে এতে লিকুইডের (তরল) মাত্রা থাকতে হয় ৪০-৫০ শতাংশ।

অধ্যাপক আবু বিন হাসান সুসান বলেন, পাখির খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকবে, বিপরীতে ওয়েল লিকুইডের মাত্রা থাকবে কম। অন্যদিকে পপি বীজে কার্বোহাইড্রেট কম থাকবে, ওয়েল লিকুইড থাকবে বেশি। ফলে তাদের ল্যাবে পাঠানো নমুনায় পপি বীজের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পপি বীজ সাধারণত কালো রঙের হয়। নমুনার বীজের রঙ ভিন্ন। এগুলো চীনা ফিড মনে হয়েছে।

বাংলাদেশে কি চাষ হয়

২০২৩ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত দেশে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা শখের বশে পপি চাষ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পপি চাষ নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর আগের মাস জানুয়ারিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে পপি গাছ পাওয়ার প্রতিবেদন প্রকাশ হয় অনলাইন নিউজ পোর্টালে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ভুট্টা গাছের সঙ্গে পপি চাষ করা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। এই উপজেলায় ৯ হাজার ৮২০টি পপি গাছ জব্দসহ এক কৃষককে আটক করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

দেশে কি আসলেই পপি চাষ হয়? শুক্রবার এ নিয়ে কথা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ঢাকা মেট্রো) উপপরিচালক মো. মানজুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলছেন, দেশে চাষ হয় না। তবে ২-৩ বছর আগে বান্দরবানে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকার গভীর অরণ্যে বিচ্ছিন্নভাবে চাষের খবর পাওয়া গিয়েছিল। তখন সেনবাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করেছেন। ভারতীয় কিছু মাদক ব্যবসায়ী সীমান্ত এলাকার চাষিদের ভুল বুঝিয়ে এগুলো চাষ করিয়েছিল।

চট্টগ্রামে ‘পপি বীজ’ জব্দ হওয়া নিয়ে মানজুরুল ইসলাম বলছেন, সেগুলো অঙ্কুরোদগমের উপযোগী কি না আগে সেটি দেখতে হবে। দেশে যেহেতু চাষ হয় না, ধারণা করা হচ্ছে এগুলো (অঙ্কুরোদগম উপযোগী হলে) বাংলাদেশ হয়ে অন্য কোথাও নেওয়া হতো।   

কোন দেশে বেশি চাষ হয়

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক সংস্থা ইউএনওডিসি’র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিয়ানমার বিশ্বের সবচেয়ে বড় আফিম উৎপাদনকারী দেশ। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট এবং সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যকার সংঘাত কৃষকদের বেআইনি আফিম চাষে ঠেলে দিয়েছে।

আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গত বছরের এপ্রিল মাসে আফিম উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যার ফলে দেশটিতে আফিম চাষ ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। ইউএনওডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর মিয়ানমারে আফিম চাষের জমির পরিমাণ আনুমানিক ৪৭ হাজার ১০০ হেক্টর। আগে ছিল ৪০ হাজার ১০০ হেক্টর। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩-এ দেশটিতে উৎপাদন ৩৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ০৮০ মেট্রিক টনে।

ইউএনওডিসি জানিয়েছে, মায়ানমারে আফিম চাষ সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে শান রাজ্যে। যা ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ নামে পরিচিত। এরপরই আছে, ভারত সীমান্তবর্তী চিন ও কাচিন রাজ্য।

পপি বীজের বাজার কেমন

দক্ষিণ এশিয়ায় চাষ বেশি হলেও পপি বীজের বড় বাজার ইউরোপে। মরডর ইন্টেলিজেন্সের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া-প্যাসিফিক, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় বাজারের আকার ২৩০ মিলিয়ন (২৩ কোটি) মার্কিন ডলারের। ২০৩০ সাল নাগাদ বাজার ছুঁতে পারে ২৮৩ মিলিয়ন (প্রায় ২৮ কোটি) ডলার। চট্টগ্রাম কাস্টমস জানিয়েছে, বন্দরে জব্দ হওয়া পপি বীজের দাম প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ঢাকা মেট্রো) উপপরিচালক মানজুরুল ইসলাম বলছেন, পপি ফুল থেকে যে সাদা রস বের করা হয় তা ২৪ ঘণ্টা পর লাল রঙ ধারণ করে। তখন সেটি মাদক হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী হয়। এটি সময়সাপেক্ষ। আফগানিস্তানে ৯৫ শতাংশ চাষ কমলেও বাজারে যে আফিম বা হেরোইন পাওয়া যায় সেটি বেশ আগে তৈরি করা। আবার এশিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত আফিম চোরাচালানের রুটগুলোও বেশ দীর্ঘ।

মানজুরুল ইসলাম বলেন, আফগানিস্তান থেকে ইরান হয়ে মধ্যপ্রাচ্য; চীন-থাইল্যান্ড-ভিয়েতনাম-লাওসে যায়। ইউরোপের একাংশে যায় তুরস্ক হয়ে। আর পূর্ব ইউরোপে যায় ইরান-রাশিয়া হয়ে।   

ইউএনওডিসি বলছে, মূলত এশিয়ার দেশগুলোর আবহাওয়া পপি চাষের জন্য উপযোগী। এ কারণেই অঞ্চলটিতে চাষ বেশি হয় এবং এর বিস্তার বাড়ছে।

সূত্র: সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়