শিরোনাম
◈ ইউনেস্কোর ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ ◈ নতুন ২ জাতীয় দিবসে ছুটি থাকবে? যা জানাগেল ◈ অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায় জার্মানি ◈ জাতীয় নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে নিতে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ চলছে : মির্জা ফখরুল ◈ বাংলা‌দেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের সূচিতে পরিবর্তন ◈ ভারতের নাগরিকত্ব নিতে চলেছেন পাকিস্তানের সা‌বেক ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া? ◈ অবৈধ অভিবাসীদের তাড়িয়ে দিলে অ্যামেরিকার লাভ না ক্ষতি? ◈ দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে ৩ পরাশক্তি: সালাহউদ্দিন আহমদ ◈ শাপলা ছাড়া অন্য প্রতীক পছন্দ করা সম্ভব নয়, ইসিকে এনসিপি ◈ চীনা প্রযুক্তিই গেমচেঞ্জার’— ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পারফরম্যান্সে মুগ্ধ পাকিস্তান

প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:০১ দুপুর
আপডেট : ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছয় জেলা নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ, চট্টগ্রামেই থাকতে চায় ফেনী

বৃহত্তর নোয়াখালীর তিন জেলা ও বৃহত্তর কুমিল্লার তিন জেলা নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ গঠনে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। তবে, শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলাবাসী। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের দাবি ফেনীকে নিয়ে ‘নোয়াখালী বিভাগ’। অন্যদিকে, প্রথম থেকেই ফেনীবাসী কুমিল্লা ও নোয়াখালীর দাবির সঙ্গে বিরোধিতা করছে। তাদের দাবি- চট্টগ্রাম বিভাগেই রাখতে হবে। তারপরও চট্টগ্রাম বিভাগকে ভাগ করে ছয় জেলা নিয়ে কুমিল্লা নামে আলাদা বিভাগ করার। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে প্রাক-নিকার সচিব কমিটি। গত ২৮শে আগস্ট এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে সভাপতি করে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির কার্যপরিধির অন্যতম হলো- নতুন বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও বিভিন্ন ধরনের থানার অধিক্ষেত্র ও সদর দপ্তর নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় ভূমি ও ভৌত অবকাঠামো সুবিধাদি প্রসঙ্গে সুপারিশ প্রদান। বাংলাদেশ সচিবালয়ের একটি সূত্র হতে জানা গেছে, আগামী প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার)’র সভায় কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে আলাদা বিভাগ করার প্রস্তাব অনুমোদন দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ কারণে নতুন মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, বিভাগ, জেলা বা উপজেলা গঠন এবং জনবল সংক্রান্ত অনুমোদনে সুপারিশ দিতে প্রাক-নিকার সচিব কমিটি গঠন করে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর আগে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা ও মেঘনা নামে বিভাগ গঠনের পরিকল্পনা করেছিল। সংস্কার কমিশন একই সীমানা নিয়ে মেঘনা নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা বিভাগ গঠনের সুপারিশ করেছে। উল্লেখ্য, এ বছরের জানুয়ারিতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় জনপ্রশাসনের প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত পুনর্গঠন শিরোনামে ষষ্ঠ অধ্যায়ের ৬ এর ১১তে স্বল্পমেয়াদি প্রস্তাব হিসেবে কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ প্রস্তাবনার সংযুক্তিতে সীমানাসহ প্রস্তাবিত মানচিত্র প্রকাশ করা হয়।

এ ছাড়া, ২০২১ সালে মেঘনা বিভাগে ফেনীকে অন্তর্ভুক্তের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছিল ফেনীবাসী। তাদের দাবি ছিল, চট্টগ্রাম বিভাগেই ফেনী থাকুক। ফের বিভাগ পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় বিরূপ মন্তব্য করেছেন ফেনীর বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এদিকে, কুমিল্লা বিভাগের সঙ্গে ফেনীকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগের প্রতিবাদে আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। ফেনীবাসীর ব্যানারে কর্মসূচিতে ঢাকাস্থ জেলাবাসী অংশ নেন।  অন্যদিকে, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা নিয়ে ‘নোয়াখালী’ নামে আলাদা বিভাগের দাবি উঠেছে বহু আগে। প্রস্তাবিত কুমিল্লা বিভাগ নয়, চট্টগ্রাম বিভাগে ফেনী থাকা যুক্তিযুক্ত মনে করছেন ফেনীর বিশিষ্টজনরা। এ প্রসঙ্গে ফেনী সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও অর্থনীতিবিদ প্রফেসর তায়বুল হক বলেন, ফেনীর সঙ্গে চট্টগ্রামের বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। দীর্ঘদিনের যোগসূত্র ছিন্ন করে নতুন বিভাগে ফেনীকে স্থানান্তর অপ্রয়োজনীয়। কেবল ফেনী নয়, বৃহত্তর নোয়াখালীও এমন সিদ্ধান্তে একমত হবেন বলে মনে হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে বুধবার একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইনে ‘মতামত ছাড়া বিভাগ প্রস্তাবনা; ঐকমত্য কমিশনকে লিগ্যাল নোটিশ’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, গত ১০ সেপ্টেম্বর ‘জুলাই জাতীয় সনদ’র চূড়ান্ত ভাষ্য প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, ভৌগোলিক অবস্থান ও যাতায়াতের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দু’টি বিভাগ গঠন করা হবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত বৈষম্যমূলক প্রস্তাবনাটি জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সংবিধান ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি উল্লেখ করে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঐকমত্য কমিশনকে নোটিশ ডিমান্ডিং জাস্টিস প্রদান করেছেন নোয়াখালীর বাসিন্দা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ। তিনি নোটিশে উল্লেখ করেন, বিভাগ আন্দোলন বলতে মূলত নোয়াখালী বিভাগের দাবিটিই মুখ্য থাকা সত্ত্বেও বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রায় ৮০ লাখ মানুষের কোনো প্রকার বক্তব্য না শুনে, কোনো প্রকার গণশুনানি না করে চাপিয়ে দেয়া ন্যাচারাল জাস্টিসের পরিপন্থি। এর ফলে সংবিধানের ৭ এবং কোনো প্রকার আলোচনা বা মতবিনিময় সভা না করে এমন সিদ্ধান্ত অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের জনগণকে যে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়নি।

বিভাগ প্রসঙ্গে ফেনীর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক আসাদুজ্জামান দারা বলেন, চট্টগ্রামের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ছাড়াও বিবিধ সম্পর্ক রয়েছে। ফেনীকে আলাদা করে প্রস্তাবিত কুমিল্লা বিভাগে নেয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। গত সরকার মেঘনা বিভাগ নাম দিয়ে সেখানে ফেনীকে যুক্ত করতে চেয়েছিল, তখন আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। একই প্রসঙ্গে ফেনী শহর ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান সোহেল বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে চট্টগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফেনীকে বিচ্ছিন্ন করার আগে মতামত নিতে হবে।  দীর্ঘদিনের যোগসূত্র ছিন্ন করে নতুন বিভাগে ফেনীকে স্থানান্তর অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করেন, প্রফেসর তায়বুল হক অধ্যক্ষ (অব.)। ফেনী সরকারি কলেজ কেবল ফেনী নয়, বৃহত্তর নোয়াখালীও এমন সিদ্ধান্তে একমত হবেন বলে মনে হচ্ছে না। সূত্র: মানবজমিন 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়