ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আটকের ৬ বছর পর নিজ দেশে ফিরে গেছেন ভারতীয় নাগরিক শ্রী বাদল উড়ান (২৮)।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে তাকে ভারতের ফুলবাড়ি সীমান্তে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের ৭৩২/১ নম্বর সাব পিলার এলাকায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করে তাকে ভারতের ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশ। হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাবান্ধা ১৮ বিজিবি কোম্পানির কমান্ডার আব্দুর রহমান, ভারতের বিএসএফ ১৮ ব্যাটালিয়নের ফুলবাড়ি কোম্পানির অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট বিক্রম সিং, পঞ্চগড় জেলা কারাগারের প্রতিনিধি এবং উভয় দেশের ইমিগ্রেশন ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
বিজিবি ও কারাগার সূত্রে জানা যায়, বাদল উড়ান ভারতের আসাম রাজ্যের নওগাঁও জেলার কালিয়াবর থানার নৈপন্নী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১৯ সালের ১৯ মে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং বিজিবির হাতে আটক হন। এ ঘটনায় পঞ্চগড় সদর থানায় বাংলাদেশ পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২-এর ৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। আদালত তাকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন, যার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের ১৮ মে।
তবে প্রকৃত ঠিকানা শনাক্তে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। ফলে সাজার মেয়াদ শেষে ‘রিলিফ প্রিজনার’ হিসেবে পঞ্চগড় জেলা কারাগারেই থাকতে হয় বাদলকে। এরপর দুই দেশের দূতাবাসের যোগাযোগ ও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার পরিচয় নিশ্চিত হলে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
এদিকে বিজিবি, বিএসএফ ও জেলা কারাগারের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তাকে ভারতে পুশব্যাক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ কেফায়েতুল ওয়ারেস।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মনিরুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘বাদল উড়ান ছয় বছর আগে অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছিলেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছুটা সময় লেগেছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা কারাগারের জেল সুপার বজলুর রশীদ সময় সংবাদকে বলেন, ‘বিদেশি কোনো বন্দি সাজার পরপরই ফেরত যেতে না পারলে তাকে অতিথি হিসেবে জেলে রাখা হয়। যাকে আরপি বা রিলিফ প্রিজনার বলা হয়। এর মাঝে দু দেশের সরকারের চুক্তি ও এমবাসির অনুমোদন বা নির্দেশনা পেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে হস্তান্তর করা হয়। তেমনি এই ভারতীয় নাগরিক বাদল সাজা শেষে আমাদের কারাগারেই ছিল। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বিজিবি বিএসএফ ও ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’