জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে বাসায় ৭দিন ধরে মুসলিম তরুণীকে আটক রেখে ধর্ষণের ঘটনার প্রধান আসামী জয়কুড়িকে (২৫) গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুর শহরের ঝুমুর সিনেমা হলের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেপ্তার জয় কুড়ি রায়পুর শহরের পুর্বলাচ গ্রামের কামাল ভূঁইয়া সড়কের স্বর্ণ ব্যবসায়ী অনন্ত কুড়ির ছেলে।
গত ১৫ আগস্ট রাতে জয় কুড়িসহ তিনজনকে আসামি করে নির্যাতিত ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে রায়পুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে পলাতক ছিল জয়কুড়ি। ঘটনার ২০দিন পর অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন জয়কুড়ি। এর আগে রায়পুর বাজারে জয়কুড়িসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলনে নামে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, টকবগে সুদর্শন যুবক জয় কুড়ি মা-বাবার অবাধ্য হয়ে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে বন্ধুদের নিয়ে মাদক (ইয়াবা) সেবনে মেতে থাকতো। অপরদিকে সুন্দরী তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বনাশ করতো। গত তিন মাস আগে রাতে ইয়াবা ক্রয়ের জন্য ফোন করে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাশের ভাড়াটিয়াকে (৫০)। কিন্তু এই ফোন রিসিভ করে তরুণী মেয়ে (১৪)। সেই সূত্র ধরেই জয় কুড়ি ওই তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক এবং দৈহিক মেলামেশায় জড়িয়ে পড়ে।
পরে ১৪ আগস্ট সন্ধ্যায় জয় কুড়ি তরুণীকে তাদের বাসার সামনে থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার। সেখানে তরুণীকে ৩দিন রাখার পর লক্ষ্মীপুর শহরে একটি বাসায় ৪দিন রেখে তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কপালে জয়কুড়ি সিঁধুর পড়াতে গেলে তখনই বিপত্তি ঘটে। তরুণী বুঝতে পারেন জয় কুড়ি হিন্দু। এ সময় চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে যাওয়ার আগেই তাকে তুলে আবার রায়পুর শহরের মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে ফেলে যায় বলে অভিযোগ করেছেন তরুণী। জয়কুড়ি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও মুসলিম তরুণী সেটা জানতো না। জয়কুড়ি তরুণীকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিতে বলেও জানান তিনি।
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় জয়কুড়িসহ তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন তরুণীর বাবা। মামলায় তরুণীকে ৭দিন আটক রেখে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল অভিযুক্ত জয়কুড়ি। বুধবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত জয়কুড়ি ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করছে।