শিরোনাম
◈ বাংলাদেশসহ ৩ দেশের সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি করল ভারত ◈ নতুন নির্দেশনা: সরকারি কর্মচারীদের বেতন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাটবে কর ◈ সৎ ও স্বপ্নবাজ মানুষরাই হবে নতুন রাজনীতির চালিকাশক্তি”— নাহিদ ইসলাম ◈ এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, ‘নিক্ষেপকারীরা’ আটক (ভিডিও) ◈ মহাসড়কে আগুন জ্বালাতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা দগ্ধ ◈ নতুন নির্বাচনী আচরণবিধি জারি: পরিবেশ রক্ষা ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কঠোর শর্ত ◈ প্রবাসীকে বাদ দিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন কীভাবে হয়, প্রশ্ন ইসি সানাউল্লাহর ◈ দেশে আবারও বাড়ল সোনার দাম, ভরি কত? ◈ হঠাৎ যেভাবে ধানমন্ডির ভোটার হলেন আসিফ মাহমুদ ◈ নভেম্বরের ৯ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহে ৪৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি

প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:১৯ বিকাল
আপডেট : ০৮ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভোলায় জমজমাট নৌকার হাট

ফরহাদ হোসেন, ভোলা: কাঠ, পেরেক, হাতুড়ি আর করাতের শব্দে মুখরিত ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের গজারিয়া কাঠপট্টি এলাকা। এখানে প্রতিদিন তৈরি হয় ডিঙি নৌকা, জয়া নৌকা থেকে শুরু করে ফিশিং বোট পর্যন্ত নানা ধরনের নৌকা। আকার ও ধরনভেদে এসব নৌকার দাম ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত।

অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই এলাকায় চলছে নৌকা তৈরির কাজ। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটান স্থানীয় মিস্ত্রিরা। এটাই তাদের একমাত্র জীবিকা। নৌকা তৈরির ওপর নির্ভর করে শতাধিক পরিবারের জীবন-জীবিকা। প্রতি বছর বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত চলে নৌকা তৈরির মৌসুম। এ সময় ব্যস্ততা ও আয় দুটোই বেশি থাকে, তবে অন্য সময়ে কাজ কমে যায়।

জেলার চাহিদা মেটানোর পর এসব নৌকা চলে যায় পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও কক্সবাজার পর্যন্ত। ভোলার ১৯০ কিলোমিটার জলসীমায় মাছ ধরার প্রধান বাহন হলো নৌকা ও ট্রলার। দুই লাখের বেশি জেলে এসব নৌকায় ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পাশাপাশি দ্বীপচর এলাকায় খেয়া পারাপারেও ভরসা শুধু নৌকা। ফলে জেলার সর্বত্রই নৌকার কদর।

প্রায় ২০ বছর ধরে এখানে কাজ করছেন মিস্ত্রিরা। বর্তমানে তারা দৈনিক ৮০০-৯০০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। শ্রমিকদের ভাষ্যমতে, আকারভেদে একেকটি নৌকা তৈরিতে লাগে এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে ১৫-২০ দিন পর্যন্ত। গজারিয়া কাঠপট্টিতে রয়েছে প্রায় ১০ জন টিম্বার ব্যবসায়ী, যারা শ্রমিকদের নিয়োগ দেন।

নৌকা বিক্রি করে টিম্বার ব্যবসায়ীরা ভালো মুনাফা পান। ছোট নৌকা বিক্রিতে লাভ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা, আর বড় ট্রলার বা ফিশিং বোট বিক্রিতে লাভ দাঁড়ায় প্রায় অর্ধলাখ টাকা। তবে কাঠ, মিস্ত্রির মজুরি ও অন্যান্য উপকরণের জন্য বড় অঙ্কের পুঁজি প্রয়োজন হয়, যার বেশিরভাগই আসে এনজিও ঋণ থেকে।

কারিগর মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমি অনেক বছর ধরে নৌকা তৈরি করছি। আগে মজুরি কম ছিল, এখন দৈনিক ৯০০ টাকা পাই।’

রফিক মিস্ত্রি জানান, ‘ছোট নৌকা বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৩০-৮০ হাজার টাকায়, আর বড় নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৫০ হাজার থেকে ৬-৭ লাখ টাকায়।’

জাকির মিস্ত্রি বলেন, ‘ভালো মানের কাঠ দিয়ে তৈরি নৌকা ১০-১২ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে। এখানকার নৌকার সুনাম দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।’

নৌকা ব্যবসায়ী নুরু ব্যাপারী জানান, প্রায় ২০০ জন শ্রমিক নৌকা তৈরির সঙ্গে জড়িত। প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার নৌকা বিক্রি হয়। তবে শ্রমিক ও কারিগরদের সরকারি বা বেসরকারি ঋণের আওতায় আনা গেলে এই শিল্প আরও প্রসার লাভ করবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমদ আকন্দ বলেন, ‘ভোলার এই সম্ভাবনাময় নৌকা শিল্পকে এগিয়ে নিতে যা যা প্রয়োজন, আমরা তা অবশ্যই করব।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়