রতন কুমার রায়, ডোমার ( নীলফামারী) প্রতিনিধি: খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের দুই নারী যাত্রীকে (মা-মেয়ে) জুস পান করিয়ে অজ্ঞান করে খুলে নিলেন কানের দুল ও নাকের ফুল। এ সময় পাশের যাত্রী ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে হাতেনাতে অজ্ঞান পার্টির সদস্য ফুল মিয়াকে (৫৫) আটক করেন। পরে যাত্রীরা ফুল মিয়ার কাছে থাকা জুস যাচাই করতে তাঁকে পান করালে তিনি নিজেও অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ ওই দুই ভুক্তভোগীসহ অজ্ঞান পার্টির সদস্য ফুল মিয়াকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দুই নারীর জ্ঞান ফিরলেও অজ্ঞান পার্টির সদস্যের জ্ঞান ফেরেনি।
রেলওয়ে পুলিশ জানায়, ফুল মিয়ার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আবদুল্লাপুরে। ভুক্তভোগী যাত্রীরা হলেন দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের রশনী রায়ের স্ত্রী কৌশিলা রায় (৫২) ও মেয়ে বীথি রানী (২৮)। বীথি রানী ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার করনাই দক্ষিণ মালঞ্চ গ্রামের উজ্জ্বল রায়ের স্ত্রী।
রেলওয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার ভোরে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘ঝ’ বগির ৭৮, ৭৯ নম্বর সিটের যাত্রী ছিলেন কৌশিলা ও বীথি। তাঁরা দিনাজপুরের বিরামপুর রেলস্টেশন থেকে সৈয়দপুর রেলস্টেশনে আসছিলেন। পাশের ৭৭ নম্বর সিটের যাত্রী ছিলেন অজ্ঞান পার্টি চক্রের সদস্য ফুল মিয়া। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে মা-মেয়েকে জুস পান করান তিনি। এতে ভুক্তভোগীরা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাঁদের কানের দুল ও নাকের ফুল খুলে নেন ফুল মিয়া।
এ সময় পাশের যাত্রী অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুর রহিম বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ফুল মিয়াকে আটক করেন। ওই বগির যাত্রীদের বিষয়টি অবগত করলে আটক ফুল মিয়া বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে যাত্রীরা তাঁর কাছে থাকা জুস তাঁকে পান করতে বাধ্য করেন। এতে ফুল মিয়া নিজেই অজ্ঞান হয়ে পড়লে সবার কাছে প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। যাত্রীরা তাৎক্ষণিক ট্রেনে দায়িত্বরত পুলিশকে অবগত করে তাঁদের হাতে তুলে দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ-উন নবী বলেন, এ ঘটনায় কৌশিলা রায়ের ছেলে রবীন্দ্রনাথ রায় মামলা করেছেন। অজ্ঞান পার্টির সদস্য ফুল মিয়ার নামে দেশের বিভিন্ন রেলওয়ে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির জ্ঞান ফিরলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।