অমর ডি কস্তা, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে এক নারীকে (৩৪) পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানী, ভিডিও ধারণ ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে ভুক্তভোগী নারী থানায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি বনপাড়া শহরের বনরূপা আবাসিক এলাকায় দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। তার স্বামী দেশের বাইরে কর্মরত। গত শনিবার দুপুরে এক আত্মীয় বড়ভাই (৪৫) তার বাসায় বেড়াতে এলে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ও স্থানীয় ছাত্রদল নেতা রনি সহযোগীদের ডেকে নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। পরে তারা ওই নারী ও তার আত্মীয়কে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে পিস্তল দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এ সময় তাদের মারধর ও আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করা হয়।
অভিযুক্তরা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে নারীটি অনুনয়–বিনয় করলেও কোনো লাভ হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি নিজের ৩ ভরি স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে ৩ লাখ টাকা জোগাড় করে দেন। বাকি ৭ লাখ টাকা তিন দিনের মধ্যে দেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়।
পরে ওই নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌসের কাছে অভিযোগ করলে তিনি থানাকে অবহিত করেন। সাহস জুগিয়ে মামলার পরামর্শ দেওয়ার পর নারীটি বাদী হয়ে মামলা করেন।
এ ঘটনায় মামলা (নং-৩৫, তারিখ: ২৭.৮.২৫) দায়ের করা হয়েছে। আসামিরা হলেন—রনি (২৯) ও তার স্ত্রী সুমাইয়া (২৪), বেলাল হোসেন বিদ্যান (২৮), ইকবাল হোসেন (২৮), কামরুল ইসলাম (২৮) এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজন। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক রয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, “অপরাধীদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের বহিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন জানিয়েছেন, “আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”