ফারুকুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মসূয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জহিরুল ইসলাম (জহির মেম্বার) দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সরকারি বালুর ডাইক থেকে বালু বিক্রি করছিলেন। আজ (২৭ আগস্ট) বুধবার দুপুরে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার বৈরাগীরচর ব্রহ্মপুত্র নদীরপাড়ে স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার তারানা ঘটনাস্থলে গিয়ে বালুর ডাইক থেকে অবৈধভাবে বালু বিক্রির সত্যতা পেয়ে জহিরুল ইসলামকে ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। তবে অভিযানের খবর পেয়ে ওই যুবদল নেতা সটকে পড়েন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয়রা ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, কটিয়াদীর বৈরাগীরচরে বালুর ডাইকটি ব্রহ্মপুত্র নদী রক্ষায় সরকারের একটি চলমান প্রকল্প ছিল। যার মাধ্যমে নদীর নাব্যতা রক্ষায় নদী খনন করা হয়। খননকৃত নদীর এই বালু উত্তোলন করে বৈরাগীরচর গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদীরপাড়ে বিশাল বড় একটি বালুর ডাইক তৈরি হয়। যা পরে সরকারি নিলামের মাধ্যমে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজনসহ এই বালুর ডাইক থেকে অবৈধভাবে মসূয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জহিরুল ইসলাম (জহির মেম্বার) এর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠে বালুর আরেক রাজ্য। আনুমানিক ১০ কোটি টাকার বালুর ডাইক থেকে এরই মধ্যে ৬ কোটি টাকার বালু বিক্রি হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এখনো আনুমানিক আরো ৪ কোটি টাকার বালু রয়েছে এ ডাইকে।
জানা যায়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জহিরুল ইসলাম (জহির মেম্বার) স্থানীয় সাবেক সাংসদ নূর মোহাম্মদের ভাগ্নে মুন এর সখ্যতায় অবৈধভাবে এই বালুর বিক্রির রাজত্ব শুরু করে। পরে সরকার পতনের পর পুনরায় এই মেম্বার কিছু সংখ্যক লোককে শেয়ার রেখে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বালুর ডাইকের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার তারানা গণমাধ্যমকে জানান, মসূয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বালুর ডাইক থেকে বালু বিক্রি করছিলেন এমন অভিযোগে বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে তার সত্যতা পাই। তিনি জানান, তারা অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে এই বালু বিক্রয় করায় তাদেরকে বালু মহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৫ (১) ধারায় ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় জহির মেম্বারের একটি বেকু মেশিন ও বালু স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।