শিরোনাম
◈ ‘বিপ্লব বিক্রি করে দিচ্ছে’: হাসিনার পতনের এক বছর পরও স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশে ◈ ভাইরাল অডিও: ঘুষ দাবির অভিযোগে এসআই চিরঞ্জীব ৬ ঘণ্টায় প্রত্যাহার ◈ কারফিউ, পথে পথে কাঁটাতারের বেড়া, ৫ই অগাস্ট ঢাকার সকাল কেমন ছিল? ◈ গণঅভ্যুত্থান দিবসে বেনাপোল বন্দরে আমদানি, রফতানি বন্ধ ◈ ড. ইউনূসের ঐতিহাসিক ভাষণ: নির্বাচন ঘোষণা ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আসতে পারে আজই ◈ ঢাকাসহ ৬ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস ◈ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি-ঘুমধুম সড়ক! ◈ প্রথম ফ্লাইট অবতরণ করল শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে ◈ টপ এন্ড টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রিজ খেল‌তে  অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল ◈ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণের ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

প্রকাশিত : ২৮ জুলাই, ২০২৫, ০৩:০৬ রাত
আপডেট : ০১ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গুলশানে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার রাজ্জাক, গ্রামের বাড়িতে উঠছে পাকা ভবন

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার আবদুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদের গ্রামের বাড়িতে তৈরি করা হচ্ছে পাকা ভবন। রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়িতে একতলা একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে রয়েছে চারটি কক্ষ। 

স্থানীয়রা বলেন, আর্থিক অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা একজন ছাত্রের বাড়িতে হঠাৎ পাকা ভবন নির্মাণ নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে। এ আলোচনায় নতুন মাত্রা পেয়েছে চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজ্জাকের গ্রেপ্তার ঘটনা। যদিও পরিবারের দাবি- জমানো টাকা, অনুদান ও ঋণ নিয়ে ভবনটি করা হচ্ছে। 

রাজ্জাকদের নির্মাণাধীন ভবনের দক্ষিণ পাশে চাচা জসিম উদ্দিনের জীর্ণ টিনের ঘর। পশ্চিম পাশে আরেক চাচার টিনের ঘর। জসিম উদ্দিন জানান, দুই-আড়াই মাস আগে রাজ্জাক ভবন নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছেন। আগে ভাঙাচোরা একটি টিনের ঘর ছিল। ওই ঘরের জায়গায় নতুন ভবন করা হচ্ছে। রাজ্জাকের মা-বাবা এখন বাড়ির প্রবেশপথের পাশের একটি কক্ষ ভাড়া করে থাকেন।

রাজ্জাকের এক চাচি বলেন, রিয়াদের বাবা ও বড় ভাই দুজনই রিকশা চালাতেন। এখন চালান না। রাজ্জাক ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে বলে শুনেছেন। গত ৫ আগস্টের পর সমন্বয়ক হয়েছেন। কিছুদিন পরপর বাড়িতে আসেন। দুই-আড়াই মাস আগে পুরোনো ঘর ভেঙে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

রাজ্জাকের মা রেজিয়া বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। ছোট ছেলে রাজ্জাক ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। বড় ছেলে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তবে বড় ছেলে ফুটপাতে ব্যবসা করেন। 

রেজিয়া বেগম জানান, মানুষের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে, তার স্বামী আয়ের টাকায় ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন। ছেলে নিজেও টিউশনি করেন, পড়ালেখার খরচ জোগাড় করেন। পাকা ভবন নির্মাণ করছেন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে, স্বামীর জমানো টাকা দিয়ে। ধারদেনাও করেছেন।

বন্যায় গত বছর ঘর সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে রেজিয়া বেগম বলেন, বন্যার পর সরকারের কাছ থেকে চার বান্ডিল ঢেউটিন পেয়েছেন, সেগুলো বিক্রি করেছেন। আল-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন থেকে ৫০ হাজার টাকা পেয়েছেন। এসব টাকাও ঘরের কাজে ব্যয় করছেন। তবে ঋণ নেয়ার কাগজপত্র দেখাতে পারেননি রেজিয়া বেগম।

যদিও এলাকাবাসীর ভাষ্য, রাজ্জাকের টাকায় পাকা ভবন হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রেজিয়া বেগম বলেন, রাজ্জাক কোথায় থেকে টাকা দেবে? তাকে উল্টো প্রতি মাসে টাকা দিতে হয়। সে টিউশনি করে। আত্মীয়স্বজন তাকে সহযোগিতা করে। 

রাজ্জাকের সহপাঠী কোরবান আলী ওরফে হৃদয় জানান, তিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রিয়াদের সঙ্গে পড়েছেন। পরে এইচএসসি পাস করে সে ঢাকায় ভর্তি হয়েছে। শুনেছেন, সেখানে রাজনীতি করত এবং পরে গত ৫ আগস্টের পর সমন্বয়ক হয়েছে। তবে এলাকায় সমন্বয়ক পরিচয়ে কোনো দাপট দেখাত না বলে জানান কোরবান।

এর আগে গত শনিবার রাতে গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে রাজ্জাকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গুলশান থানায় করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্জাকসহ চারজনকে আজ সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। ঘটনার পর আবদুর রাজ্জাককে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্যোগে কয়েক মাস আগে ছাত্রসংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। রাজ্জাক বর্তমানে এই ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। এই সংগঠন হওয়ার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গত ফেব্রুয়ারিতে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছিল, সেই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছিল রাজ্জাককে। আর গত শনিবার রাতে রাজ্জাকের সঙ্গে গ্রেপ্তার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন (মুন্না) এবং সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব। উৎস: চ্যানেল২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়