এন এ মুরাদ, মুরাদনগর: কুমিল্লার মুরাদনগরে এসএসসি- পরীক্ষার ফলাফলে চরম বিপর্যয় । শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অমনোযোগী, শিক্ষকদের কমার্শিয়াল মনোভাব ও কোচিং নির্ভরতাকে দায়ী করছেন সচেতন সমাজ।
এবছর মুরাদনগর থেকে ৫ হাজার ৮শ ২৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাশ করেছে ২ হাজার ৮৯৩ জন। উপজেলার ৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪ টির পাসের হার ৫০% এর নিচে। এরমধ্যে জিপিএ -৫ পেয়েছে ১২২ জন। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ফলাফলে বিপর্যয় বেশী। কোথাও পাসের হার ১০-২০%।
এদিকে উপজেলায় সবচেয়ে বেশি রেজাল্ট খারাপ করেছে শ্রীকাইল নজম উদ্দিন ভূঁইয়া বালিকা বিদ্যালয় তাদের রেজাল্টের হার ১৮.৬৭% ও বাইড়া স্কুল আরিফ স্কুল এন্ড কলেজের পাশের হার ১৮.১২℅।
তারপরে বিষ্ণপুর ছৈয়নউদ্দিন সরকার উচ্চ বিদ্যালয়, ২০.৫℅, পাঁচকিত্তা উচ্চ বিদ্যালয়, ২৮℅, ছালিয়াকান্দি ও কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয় যথাক্রমে পাশের হার ৩০℅।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, "শিক্ষার্থীরা মোবাইল গেমস, টিকটক ও ফেসবুকে আসক্ত। ক্লাসে উপস্থিতি বাড়লেও মনোযোগ নেই তাদের। পড়াতে গেলেও ভয়ে থাকতে হয়, কোন কিশোর গ্যাং কখন আক্রমণ করে বসে।
শিক্ষার ফলাফল বিপর্যের কারণ উল্লেখ করে চাপিতলা অজিফা খাতুন উচ্চ বিদ্যলয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি ও পড়াশোনায় অমনোযোগী, অভিভাবকদের বেখেয়ালি, এছাড়াও এনটিআরসিএ কতৃক বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক সরবরাহের সংকটই ফলাফল খারাপ হওয়ার মূল কারণ ।
শিক্ষক জামাল উদ্দিনের বলেন, "অভিভাবকরা শুধু ফলাফল চান, সন্তানকে সময় দেন না। শিক্ষার্থীরা নোট-গাইডে ভরসা করে, পাঠ্যবই খোলে না। অধিকাংশই নকলের আশায় কোচিং সেন্টারে গিয়ে সময় কাটায়।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার পতনের পর থেকে অধিকাংশ শিক্ষার্থী রাজনৈতিক মিছিল মিটিংয়ে যুক্ত হয়েছে। এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বৃদ্ধি করেছে। বিভিন্ন ষড়যন্ত্রী মহল তারা শিক্ষার্থীদের ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেছে। এতে তাঁরা পড়াশোনা থেকে অনেকটা ছিটকে পরেছে।
মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম তালুকদার বলেন," শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা যেমন করেছে সেই অনুযায়ী রেজাল্ট হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সকল স্টেক হোল্ডারদের একত্রে কাজ করতে হবে।