কিবরিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পূর্ববিরোধের জেরে দুই গ্রামের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে উপজেলার আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা ঘণ্টাব্যাপী চলে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত অন্তত ৩০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে।
১৪৪ ধারা জারি:
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার বিকেল ৪টা থেকে মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের সূত্রপাত:
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফেসবুকে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে গত ৪ জুলাই স্থানীয় সাংবাদিক আশাহিদ আলীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে অপর সাংবাদিক সেলিম তালুকদার ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এর জের ধরে আনমুন গ্রামের লোকজন তিমিরপুর গ্রামের দুই তরুণকে আটকে পুলিশে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার দুপুর থেকেই দুই পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা, বল্লম ও ধারালো অস্ত্রসহ সজ্জিত হয়ে এলাকায় জড়ো হয়। বিকেলে উপজেলা সদরে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরেকজনের মৃত্যু হয়। আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো নবীগঞ্জ শহর।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ:
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, "তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।"
এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তৎপর রয়েছে।