শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ০৬ জুলাই, ২০২৫, ০৮:২৫ রাত
আপডেট : ১৬ জুলাই, ২০২৫, ০১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবায় অচলবস্থা, দ্বায়িত্বে একজন চিকিৎসক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ মারাত্মক জনবল সংকটে স্থবির হয়ে পড়েছে চিকিৎসা সেবা। অথচ চিকিৎসকরা রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছেন। সুযোগ-সুবিধা নেয়ার জন্য প্রেষণে রয়েছেন অন্য হাসপাতালে। বর্তমানে উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়েই পুরো হাসপাতালের আউটডোর-ইনডোরের রোগীদের চিকিৎসা সেবা চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হয়ে ফেরত যাচ্ছে প্রতিদিন শত শত রোগী। ভোগান্তির কারণে হাসপাতাল বিমুখ হচ্ছে সাধারন জনগণ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবকাঠামোগতভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেসথেশিয়া), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনী) সহ মোট ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কাগজে-কলমে ৫ জন মেডিকেল অফিসার থাকলেও এর মধ্যে ২ জন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং ১ জন জেলা কারাগারে ডেপুটেশনে রয়েছেন। এছাড়া ৪ জন জুনিয়র কনসালট্যান্টের মধ্যে ১ জন রয়েছেন ডেপুটেশনে কুড়িগ্রামের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে এবং ১ জন রয়েছেন হজ্বব্রত পালনের জন্য সৌদি আরবে।

ফলে ২ জন মেডিকেল অফিসার, ২ জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট এবং ১ জন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট ৫ জন দায়িত্বরত রয়েছেন রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর মধ্যে যিনি রাতে ডিউটি করেন, পরদিন তার অফ ডে থাকে। আবার কেউ ছুটিতে গেলে আরও টানাপোড়েন শুরু হয়। এছাড়া দিনে যিনি ডিউটি করেন, রাতে তার ডিউটি থাকে না। আন্তঃবিভাগ ও বহিঃবিভাগ মিলে মাত্র ১ জন চিকিৎসক নিয়মিত  থাকায় চিকিৎসা সেবায় মারাত্মক অচলবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে হাসপাতালে নেই আবাসিক মেডিকেল অফিসার। চিকিৎসক, স্টাফ নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ডেন্টাল, ইপিআই টেকনিশিয়ান, সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারসহ অর্ধশতাধিক পদ শূন্য থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অপারেটরের অভাবে আলট্রাসনো মেশিন থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে কার্যক্রম। তাছাড়াও রয়েছে ওষুধের অপ্রতুলতা। জরুরি বিভাগে একজনও ওয়ার্ড বয় না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও সঠিকভাবে পাচ্ছেন না সাধারণ  জনসাধারণ। 

এ ব্যাপারে মেডিকেল অফিসার ডা. মনিষা বলেন,হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরের রোগীদের এতো চাপ। যে কারণে ইমারজেন্সিতে মুমূর্ষু রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া যাচ্ছে না। সঠিকভাবে কোন রোগীকে না দেখে প্রেসক্রিপসন দিতে পারছি না। আমি একাই কিভাবে হাসপাতালের এতোগুলো রোগীর চিকিৎসা দেই। 

এদিকে চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রায় আড়াই বছর ধরে উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে অবস্থিত রতিগ্রাম স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। উপজেলার উমরমজিদ ও পাঁঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা চলছে ফার্মাসিস্ট দিয়ে। একজন স্যাকমো (উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) পরিচালনা করছেন নাজিমখান ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি।

এই পরিস্থিতিতে প্রায় আড়াই লক্ষ জনসংখ্যা অধ্যুষিত রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রগুলোতে জনসাধারণ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে উন্নত চিকিৎসাসেবা গ্রহণে যাদের সামর্থ্য নেই, সেসব নিম্নবিত্ত অসহায় মানুষগুলো চরম বিপাকে পড়েছেন।

রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. গোলাম রসুল রাখী এ বিষয়ে বলেন, চিকিৎসক সহ প্রায় অর্ধশতাধিক পদ শুন্য থাকায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট  বার বার চিকিৎসক চেয়েও কোন চিকিৎসক পাচ্ছি না। অনেকে ডিপুটেশনে অন্যত্র রয়েছেন।

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল ইমরান বলেন, জেলার সব হাসপাতালেই একই অবস্থা। অনেক চিকিৎসক বেতন নেন রাজারহাট থেকে কিন্তু তারা প্রেষণে রয়েছে অন্য হাসপাতালে। যেখান থেকে যিনি বেতন নেন, সেখানে তার অবস্থান হওয়া উচিত। তাহলে চিকিৎসা সেবা এতোটা ব্যাহত হত না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়