শিরোনাম
◈ নিউইয়র্কে জোহরান মামদানির জয়: কেন ক্ষুব্ধ মোদি সমর্থকেরা? আল–জাজিরার প্রতিবেদন ◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা

প্রকাশিত : ০৩ জুলাই, ২০২৫, ০১:১৫ দুপুর
আপডেট : ০৫ জুলাই, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুমিল্লায় মাদক ও মোবাইল চুরি ঘিরে গণপিটুনি, একই পরিবারের মা-ছেলে-মেয়ে নিহত

শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা ব্যুরো: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে এক পরিবারের ওপর গণপিটুনির ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন—একই পরিবারের মা, ছেলে ও মেয়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় একজন নারী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ি গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন—রুবি বেগম (৫৮), তাঁর ছেলে রাসেল (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৭)। গুরুতর আহত অবস্থায় রাসেলের ভাবি রুমা আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

ঘটনার পেছনে মোবাইল চুরি ও পুরনো বিরোধ
স্থানীয়দের ভাষ্য, নিহত রুবি বেগমের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্ট প্রায় ৮২টি মামলা ছিল। তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এলাকায় মোবাইল চুরির একটি ঘটনা কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে রুবি বেগম ও তাঁর ছেলে রাসেল অভিযুক্ত কয়েকজনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।

এরই জেরে বৃহস্পতিবার সকালে শতাধিক উত্তেজিত গ্রামবাসী লাঠিসোটা নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি মারধরের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান।

ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি: ‘বিনা উস্কানিতে নির্মম হত্যাকাণ্ড’
নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার বলেন, “কয়েকদিন আগে আমাদের দোকানের এক কর্মচারী মোবাইল চুরি করেছিল বশির মিয়ার বাড়ি থেকে। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সালিশে মীমাংসা হয়। এর মধ্যেই হঠাৎ করে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাই।”

তিনি দাবি করেন, তাঁর শাশুড়ি রুবি বেগম তিন বছর আগে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছিলেন।

মানবাধিকারকর্মীদের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “চুরি বা মাদক—যে অভিযোগই থাকুক, কাউকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা মানবতাবিরোধী অপরাধ। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

পুলিশ প্রশাসনের অবস্থান
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, “নিহতদের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্ট অভিযোগ ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেই ক্ষোভ থেকেই এই হামলা। জড়িতদের শনাক্তে অভিযান চলছে।”

কুমিল্লার পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান বলেন, “কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তাকে হত্যা করার অধিকার কারও নেই। এটা আইনহীনতা ও দণ্ডনীয় অপরাধ। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

অতঙ্ক ও শোকের ছায়া কড়ইবাড়ি গ্রামে
ঘটনার পর কড়ইবাড়ি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। নিহতদের স্বজনরা শোকাহত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়