শামীম মীর গৌরনদী প্রতিনিধি : বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার শরিকল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড পূর্ব গরমগাল ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন খালের উপর নির্মিত আয়রন ব্রিজটি এখন জনদুর্ভোগের এক বড় প্রতীক। কংক্রিটের পাটাতন ভেঙে নিচে ঝুলে পড়েছে, ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কও ভেঙে গেছে। ব্রিজের চারপাশ বনজ জঙ্গলে আবৃত হয়ে এমন চিত্রের সৃষ্টি হয়েছে যে, দেখে মনে হয় এটি কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার ধ্বংসস্তূপ।
স্থানীয়দের জীবন যেন এই ভাঙা ব্রীজের সাথে প্রতিদিন এক যুদ্ধ। ব্রীজ না থাকায় বাধ্য হয়ে অনেকে সুপারি গাছ ফেলে কোনোমতে পারাপার করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় ১২০০ পরিবারের বসবাস এই এলাকায়। ঈদগাহ ময়দানে নামাজ পড়তে যেতে এবং পিঙ্গলাকাঠি স্কুলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৬০ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হাওলাদার বলেন, “ঈদের নামাজ বা কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলে আমাদের এই ভাঙা ব্রিজ দিয়েই যেতে হয়। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু বিকল্প কোনো রাস্তা নেই।”
পিঙ্গুলাকাঠি স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সামিয়া সিফা বলেন, “ব্রিজ পার হতে খুব ভয় লাগে, যেকোনো সময় নিচে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।” স্থানীয় বাসিন্দা পারভীন আক্তার বলেন, “ব্রিজ পার হতে গিয়ে আমি দুই-তিনবার পড়ে গিয়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছি।” পিঙ্গলাকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র জিহাদ সরদার, নাহিদ শিকদার ও রুহুল আমিন দাবি করেন, “অসীম হাওলাদার ও দেলোয়ার হাওলাদারের বাড়ীর সামনের এই আয়রন ব্রিজটি ভেঙে নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হোক।”
স্থানীয় ভ্যানচালক হেদায়েত শিকদার বলেন, “ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে মালামাল পারাপার করতে পারছি না। ফলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”
এই জরাজীর্ণ ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার বা নতুন ব্রিজ নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরী বলেন, আমি ইতোমধ্যে সেতুটি পরিদর্শন করেছি। এলজিইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।