এন এ মুরাদ,মুরাদনগর : কুমিল্লার বাঙ্গরায় পুলিশ হেফাজতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যবসায়ী শেখ জুয়েল (৪৫) ৬ নং বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের বাঙ্গরা গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে। শেখ জুয়েল পেশায় একজন ওয়াইফাই ও ডিস ব্যবসায়ী।
এদিকে নিহত ব্যবসায়ী জুয়েলের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে চলছে রাজনৈতিক টানা হেঁচড়া। কেউ দাবি করছেন তিনি বিএনপির নেতা আবার কেউ বলছেন জুয়েল দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো।
স্থানীয়রা জানান, জুয়েল একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। তবে গত কয়েক বছর যাবত কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় ছিলেন না। সে ব্যবসা নিয়ে ব্যাস্ত ছিলো। শেখ জুয়েলের ছোট ভাই শেখ শাহপরান রুবেল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাজনীতি করেন।
পুলিশ জানায়, জুয়েল মাদকাসক্ত ছিলো । তাকে একটি বাড়ি থেকে ৭০ পিছ ইয়াবাসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় আনার পর বুক ব্যাথা অনুভব করলে জুয়েলকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তাকে নির্যাতন করার বিষয়টি অস্বীকার করেন থানা পুলিশ ।
নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমার স্বামী ওয়াইফাইয়ের বিল কালেকশন করতে বেরিয়ে যায়। দুপুরের পর খবর পাই তাকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেছে । থানায় গিয়ে আমার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পরে অনেক অনুরোধ করে স্বামীর সাথে দেখা করি। তখন জুয়েল আমাকে জানায়- বিনা কারণে পুলিশ তাকে আটক করেছে।
নিহতের ছেলে শেখ সিহাব বলেন, বিনা অপরাধে পুলিশ আমার বাবাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলছে। আমার বাবাকে হাসপাতালে নেয়ার ব্যাপারেও পুলিশ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা হাসপাতালে গিয়ে বাবার মৃতদেহ দেখতে পাই।
বাঙ্গরা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শেখ সফিকুল ইসলাম বলেন, আমার চাচাতো ভাই জুয়েলকে বাঙ্গরা বাজার থানার এস আই আল আমিন ধরে নিয়ে গেছে খবর পাই। রাত সাড়ে ৮ টায় কল দিয়ে জুয়েলের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ আমাকে মুরাদনগর হাসপাতালে আসতে বলে। হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাইকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রেখেছে।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, রাত ৮ টা ৫০ মিনিটে ভিকটিমকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তাকে মৃত দেখতে পাই।
বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ৭০ পিছ ইয়াবাসহ জুয়েলকে আটক করেন বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ। সে অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পূর্বেও জুয়েল একবার হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানাগেছে। নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে পাঠানো হয়েছে।