পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চর বিশ্বাস এলাকায় গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি) ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ১১টার দিকে এই নেতা তার নিজ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঘটনা শুনে সেনাবাহিনী সেখানে যাওয়ার অনেক পর তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গণ অধিকার পরিষদের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করে। এতে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের (ভিপি নুর) ছোটভাই আমিনুল ইসলাম নুরসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।
এদের মধ্যে গুরুতর আহতরা হচ্ছেন, আমিনুল ইসলাম নুর, কামাল খলিফা, ইলিয়াস হোসেন, রবি মোল্লা, মারুফ হোসেন, শান্ত, শুভ, লোকমান হোসেন, মাকসুদ খান, মফিজ উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক, সোহেল রানা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বকুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া এলাকায় আয়োজিত এক স্মরণসভায় অংশ নিয়ে ফেরার পথে অবরুদ্ধ হন তিনি। ঘটনার তিন ঘণ্টার মাথায় রাত ১টার দিকে সেনাবাহিনীর দুইটি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় নুরুল হক পাতাবুনিয়া বাজারে অবস্থান করেন।
নুরুল হক নুর তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া পোষ্টে উল্লেখ করেন, গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা রাস্তায় গাছ ফেলে গুলতি (ছটকা), লোহার রড, রামদা নিয়ে তাদের পথরোধ করেন। এ সময় স্থানীয় কয়েক জনকে মারধর করে দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন বলেন, নুরুল হক নুর এলাকায় অবস্থান করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এ ছাড়াও বুধবার তিনি প্রকাশ্যে একটি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে জেলা বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতাকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন। তাছাড়া বৃহস্পতিবার চরবিশ্বাস বাজারে তার লোকজন বিএনপির নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালিয়েছেন। এইসব উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে স্থানীয়রা লোকজন তার প্রতি ক্ষিপ্ত হতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। ভিপি নুর অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি জেনে আমি সেনাবাহিনী এবং পুলিশ-প্রশাসনকে উদ্ধারের জন্য আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছি। আমি চাই গলাচিপা উপজেলার পরিবেশ শান্ত এবং সুশৃঙ্খল থাকুক।’
নুরের সঙ্গে থাকা গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল আমীন জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তাদের পাতাবুনিয়া বাজারে বাসিয়ে রাখেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বাসিয়ে রাখার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দিতে অপারগতা জানিয়ে নুর ও তাদের গলাচিপা এলাকা ত্যাগ করে পটুয়াখালী জেলা শহরে যেতে অনুরোধ জানান।
তিনি আরও জানান, এরপর তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা না পেয়ে গলাচিপা ডাকবাংলোতে রাত্রী যাপনের উদ্দেশে চলে যান।