মহাসড়কের বেহাল দশা, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ
শামীম মীর গৌরনদী প্রতিনিধি : ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসছে। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় এই ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে লাখো মানুষ নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক ব্যবহার করেই গন্তব্যে পৌঁছান। কিন্তু সেই মহাসড়ক এখনই অপ্রস্তুত ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খাদে-খন্দে মহাসড়ক, কোথাও বৃষ্টির জমে থাকা পানি।
বলছি বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে বরিশাল সদর পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার মহাসড়কের কথা। সড়কে বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও বিটুমিন উঠে গিয়ে রাস্তার পিচস্তর বিলীন হয়ে গেছে।
সাকুরা গাড়ির চালক জাকির কাজী বলেন টরকী বাসস্ট্যান্ডের সড়কের প্রায় ২০ থেকে ৩০ ফুট জায়গাজুড়ে বিটুমিন উঠে যাওয়ার কারনে নিম্নমানের ইট বিছিয়ে সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়েছে, যা সামান্য কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তাও উঠে গেছে। ফলে ওইসব জায়গা এখন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
এছাড়া রাস্তায় বিভিন্ন স্থানে উঁচু-নিচু টিউমারের মতো ঢেউ উঠেছে, যা যানবাহনের গতিতে প্রভাব ফেলছে এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চালকরা।
এ অবস্থায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক মাসে এই সড়কে অন্তত ৭-৮টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বার্থী বাসস্ট্যান্ডে সাহারিয়া নামের গৌননদী সরকারি এক কলেজ ছাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় মারাগেছেন। গাড়ির চাকা গর্তে পড়লে হঠাৎ ব্রেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। আবার, রাস্তায় জমে থাকা পানি ছিটকে পথচারী ও মোটরসাইকেল আরোহীদের জামাকাপড় নষ্ট করে দিচ্ছে। অভিযোগ করে মোটরসাইকেল আরোহী সাকিব হোসেন বলেন দূরপাল্লার পরিবহনের কারনে আমাদের জামাকাপড় পানি ছিটে নষ্ট হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে গাড়ি চালক আমির হোনেন বলেন ঈদ মৌসুমে বাড়তি চাপ, কিন্তু প্রস্তুতি নেই। সাধারণত ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু সেই তুলনায় মহাসড়কের সংস্কারে তেমন কোনো দৃশ্যমান প্রস্তুতি নেই।
এছাড়া গৌরনদী জিরো পয়েন্ট, গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের বিটুমিন উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে বড় গর্ত। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এই অংশে রোদে শুকালে ধুলা, আর বৃষ্টিতে কাদা-পানি যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে ফেলে। জনভোগান্তি কমাতে জরুরি সংস্কার প্রয়োজন এমনটা দাবী বসা কাউন্টার মালিকদের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঈদের আগে অন্তত জরুরি সংস্কার না করা হলে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যানবাহনের গতিশীলতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এবিষয় সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একাধীক বার কোন করে ফোন না ধরায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।