আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সমাজে সংস্কারের জন্য যে প্রত্যাশা বা চাপ তৈরি হয়েছে, সেটার তুলনায় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়সীমা ও সরকার কাঠামো খুব যথোপযুক্ত না। তাই সরকারকে অধিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান পরিবর্তনের চেষ্টা করবে না।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, সরকারের সমস্ত সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই দেশের শাসকরা যেন অত্যাচারী হয়ে মানুষের জীবন বিপন্ন করে দিতে না পারে, মানুষ যেন মামলার জটে পড়ে সর্বশান্ত না হয়, উচ্চ নাগরিক সুবিধা ভোগ করার ক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বাধীনতা যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, মানুষ যেন 'ডিফাইন লিগ্যাল সিস্টেমে' থাকতে পারে—এসব লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন কমিশনের মাধ্যমে যেসব সংস্কার প্রস্তাব পাওয়া গেছে, সেগুলো থেকে আশু বাস্তবায়নযোগ্য শতাধিক প্রস্তাব চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করার কাজ শুরু করা হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগির বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে সিপিসি (দেওয়ানি কার্যবিধি), সাইবার সুরক্ষা আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইনসহ বিভিন্ন আইন সংশোধন করেছে। শিগগির জুডিসিয়াল সার্ভিসের নিয়োগ বিধিমালা ও জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন সংশোধন করতে যাচ্ছে।
গুম প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন বিষয়ক দুটি মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। এগুলো আগামী এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও অনেক আইন সংশোধন করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। যেসব সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য প্রয়োজন (প্রধানত সংবিধান সংশোধন বিষয়ক) সেই সমস্ত ক্ষেত্রে জুলাই চার্টারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। জুলাই মাসে এই চার্টার তৈরি হয়ে গেলে তার ভিত্তিতে বড় ধরনের সংস্কারগুলো করা সম্ভব হবে। উৎস: ডেইলি স্টার।