মাহবুবুর রহমান, ডেনমার্ক থেকে: ক্যানিউট ছিলেন ডেনমার্ক, ইংল্যান্ড ও নরওয়ের রাজা(৯৯০-১০৩৫),এই সাম্রাজ্যকে উত্তর সাগর সাম্রাজ্যও বলা হতো।
তিনি ছিলেন একজন দুঃসাহসী ভাইকিং যোদ্ধা, যার কারনে তিনি এই বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে পেরেছিলেন।রাজা ক্যানিউটের রাজ্য পরিষদের চারিপার্শ্বের সদস্যরা ক্যানিউটকে খুব তোষামোদ করে,খুশি করার জন্য বলেছিলেন রাজা সাহেব নির্দেশ দিলে সমুদ্রের জোয়ারও থেমে যাবে,এমনকি সমুদ্রের পানিও রাজার পা ভেজাতে সাহস করবে না।কিন্তু রাজা ক্যানিউটকে তার পরিষদের তোষামোদকারীরা বিভ্রান্ত করতে পারেনি,তিনি জানতেন সমুদ্রের জোয়ার তাকে মান্য করবে না।
তোষামোদের ফলে পৃথিবীর অনেক শাসক অতীতে বিভ্রান্ত হয়েছেন এবং বর্তমানেও হচ্ছেন। যার ফলে সমাজ -জাতি, রাষ্ট্র কিংবা সংগঠনের জন্য কল্যাণকর না হয়ে বরং ক্ষতিকর হয়েছে এবং ধ্বংস বয়ে এনেছে।
যেসব ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রধানরা ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করেন এবং তারা আনুগত্য তোষামোদকারী ও চাটুকার ব্যক্তিদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকতে পছন্দ করেন,যার পরিনতি পরে ভয়ংকর হিসাবে দেখা যায়।
ব্যক্তি জীবনে কিংবা রাজনীতিতে তৈল মারার বিষয়টি আজকাল বেশী দেখা যায় ।তৈল মারা শব্দটি প্রকৃতি পক্ষে মিথ্যা প্রশংসা বা লোক দেখানো স্তুতি ছাড়া আর কিছুই না ।
যে নিজের চরিত্র হারিয়ে বা বিলিয়ে দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে তাকে “তেল মারা”ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত করা হয়ে থাকে। বাস্তবিক অর্থে তেলবাজরাই আজকাল বেশী শক্তিমান এবং তাঁদের পিছনে ত্যাগী ও সৎ ব্যক্তিদের তৈল মর্দন করতে হয়,যা অত্যান্ত দু:খজনক ও লজ্জার এবং পরিতাপের বিষয়।
আমাদের দেশে বিশেষ করে রাজনীতিতে বর্তমান সময়ে মেধার চেয়ে চাটুকারিতা ও তোষামোদ কারীদের প্রাধান্য বেশি । সেই কারনেই কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতারা তাদের ক্ষমতা ও শক্তি এবং পদ পাকা-পোক্ত করার জন্য দলীয় প্রধানের তোষামদি ও চাটুকারিতা করতে কুন্ঠাবোধ করেন না।যা একটি আর্দশিক দলের গঠনতন্ত্র ও চেতনার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতার সামিল।
মাহবুবুর রহমান: সাধারণ সম্পাদক, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগ
আপনার মতামত লিখুন :