রহিদুল খান : [২] যে সব জেলায় সংক্রমণের হার কমপক্ষে ১০ শতাংশ সেসব জেলাকে রেডজোনভুক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ওমিক্রণ শনাক্ত ও করোনা সংক্রমণ বেশি হওয়ায় এ তালিকায় উঠে এসেছে যশোর।
[৩] এদিকে, যশোর লাল তালিকাভূক্ত হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করে করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ড সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রাখার নির্দেশ ও হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে বৈঠক করেছেন। এছাড়া আট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও করোনা সংক্রান্ত বিশেষ সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
[৪] স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, করোনা সংক্রমণের গত এক সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণ করে স্বাস্থ্য বিভাগ যশোরসহ ১২টি জেলাকে লাল তালিকাভূক্ত বা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে। হলুদ জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে ৩২ জেলা ও গ্রিন জোনে রয়েছে ১৬ জেলা। এছাড়া এখনো ঝুঁকিমুক্ত আছে ১৬ জেলা। অবশ্য আগে থেকেই রেডজোনে ছিলো ঢাকা ও রাঙ্গামাটি জেলা। লাল তালিকার নতুন জেলাগুলো হলো, যশোর, কুষ্টিয়া, গাজীপুর, রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, লালমনিরহাট, খাগড়াছড়ি ও পঞ্চগড়। ইতিমধ্যে কুষ্টিয়ায় করোনায় গত দু’দিনে দু’জন করে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
[৫] দেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের, যা আগের সপ্তাহে ৩ থেকে ৯ জানুয়ারির চেয়ে ৩৭ জন বেশি। এই সময়ে মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৮৫ শতাংশ ও সংক্রমণ বেড়েছে ২২২ শতাংশ।
[৬] বুধবার পর্যন্ত যশোরে গড় করোনা সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ২১ শতাংশ, কুষ্টিয়ায় ১১.৩৮, গাজীপুরে ১০.৪৯, রাজশাহীতে ১৪.৭৪, বগুড়ায় ১১.৮৪, দিনাজপুর ১১.২৬, চট্টগ্রামে ১৮.৪৮, লালমনরিহাটে ১০.৭১, খাগড়াছড়িতে ১০.১৯ শতাংশ ও পঞ্চগড়ে ১০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। যে সব জেলায় করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশ সেগুলোকে হলুদ জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া ৫ শতাংশের নিচের ১৬ জেলাকে ঝুঁকিমুক্ত বলা হয়েছে।
[৭] এদিকে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরের ১৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যবিপ্রবির ল্যাবে যশোরের ১৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪১ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে এবং ৮৯ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
[৮] এর আগে গত ১২ জানুয়ারি যবিপ্রবি ল্যাবে তিনজনের পরীক্ষার ফলাফলে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রণ শনাক্ত হয়। যা খুলনা বিভাগের দশ জেলার মধ্যে প্রথম এ ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে। যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জিনোম সিকুয়েন্সের মাধ্যমে করোনার নতুন এ ধরণ শনাক্ত করেন।
[৯] ওমিক্রণ আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন ভারতীয় নাগরিক। একজন পুরুষ, যার বয়স ৩০ বছর এবং অপরজন নারীর বয়স ৪১ বছর। তাদের মধ্যে করোনার তেমন কোনো উপসর্গ ছিল না। অপর আক্রান্ত কুষ্টিয়ার পুরুষ নাগরিকের বয়স ২৫ বছর। তিনি স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বলে গবেষক দলটি ধারণা করছেন। ওই ব্যক্তির তিন দিন ধরে ঠান্ডা, গলা ব্যাথা ছাড়া অন্য কোনো উপসর্গ ছিল না। এ তিনজনই যশোর থেকে করোনা পরীক্ষা করান। তারা বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফিরছিলেন। সম্পাদনা : জেরিন আহমেদ