শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারী, ২০২২, ০১:০৭ রাত
আপডেট : ১৫ জানুয়ারী, ২০২২, ০১:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শখের বশে আপেল কুল চাষ করে কলেজছাত্রের ভাগ্যবদল

নিউজ ডেস্ক : ফরিদপুরের মধুখালীতে কলেজছাত্র মো. জসীম তার দুই বন্ধু সাজ্জাদ ও মামুনকে সাথে নিয়ে শখের বশে করেছিলেন বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি কুলের বাগান। বাবা-মায়ের কাছে থেকে অনুমতি নিয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেছিলেন ৩৫০টি কুলের চারা। বাংলাদেশ প্রতিদিন

বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি আপেল কুলের এই বাগান দেখতে প্রায় নিয়মিত লোকজন ভিড় করছেন। আলোচিত এই কাশ্মীরি কুলের বাগানটি মধুখালীর কামারখালী ইউনিয়নের গড়াই নদীর ধারে সাবেক ইউপি সদস্য নুরুন্নাহারের বাড়ির পাশে ফুলবাড়ী মাঠে অবস্থিত।

জসীম জানান, অনেক আগে থেকেই কৃষির প্রতি আমার বেশ আগ্রহ ছিল। রাকিবের বাগান দেখে কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠি। বিষয়টি মা-বাবাকে জানালে তাদের উৎসাহের পাশাপাশি অর্থসহ জমির যোগান দেন। পরে গোপালগঞ্জ থেকে কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরী আপেল কুলের ৩৫০টি চারা সংগ্রহ করি। যাতায়াতসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকা চারা সংগ্রহের কাজে ব্যয় হয়।

এরপর কামারখালী গড়াই নদীর ধারে ফুলবাড়ী মাঠে আমাদের নিজস্ব ৫০ শতাংশ জমিতে ৬ ফুট দূরত্ব রেখে ৩৫০টি চারা রোপণ করি। এখন পর্যন্ত এই বাগানে আমার ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। মাত্র সাত মাস পরই গাছগুলোতে কুল আসতে থাকে। এখন প্রতিটি গাছ কুলের ভারে নুয়ে পড়েছে। প্রথমে শখ থাকলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার ইচ্ছা আছে। বাগান দেখে জসীম নিজেই অভিভূত। আশপাশে এলাকার লোকজন আগ্রহ নিয়ে আসছেন বাগান দেখতে।

তিনি আরও জানান, বাগানে যখন কিছু রোগ দেখা দেয় তখন কামারখালী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আজিজুল হকের পরামর্শ নেই। ১ মাস পরপর গাছে ওষুধ স্প্রে করতে হয়। সেক্ষেত্রে লাভের অংশ অনেক বেশি থাকে। প্রথম দিকে আমার বাগান থেকে ১১০ টাকা কেজি, পরে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রয় করছি। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার কুল বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ পরে পুরোদমে বাগানের কুল বিক্রির উপযোগী হবে। এ বাগান থেকে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা আয় করতে পারবো বলে আশা করছি। শিক্ষিত বেকার তরুণ-যুবকদের উদ্দেশে জসীম বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি ছোট ছোট উদ্যোগ নিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করা যায়।

তিনি বলেন, কুল চাষে শ্রম ও পুঁজি লাগে কম। কিন্তু লাভ হয় বেশি। প্রতিটি কুল গাছ দীর্ঘ ৩ বছর সময় ধরে ভাল ফল দেয় এবং এই কুল চাষে প্রতি বিঘায় ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিন বছরে তিন থেকে চার লাখ টাকা আয় করাও সম্ভব। আমি অনেক দূর থেকে চারা সংগ্রহ করায় খরচ একটু বেশি পড়েছে। প্রয়োজনে তরুণ-যুবকদের এই কাজে আমার সহযোগিতা থাকবে সবসময়। তাছাড়া এই কুল সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় মিনি আপেল নামে পরিচিত পাওয়া ও বাজারদর বেশি থাকায় বাড়তি লাভ করা যায়। এখান থেকে নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশের কৃষিখাতকে এগিয়ে নেওয়া যাবে।

কামারখালী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আজিজুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার কৃষির প্রতি ঝোঁক দেখে খুশি হয়েছি। শিক্ষিত বেকার যারা তারাও এই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারেন। শখের কাশ্মীরিসহ উন্নত জাতের আপেল কুলের চাষ করলেও জসীমের বাগানে এখন বাণিজ্যিকভাবে কুলের চাষ হয়েছে। তার এই কুল চাষ দেখে অনেক যুবক কৃষিতে আগ্রহ হচ্ছেন। তাছাড়াও তিনি তাদের কুল বাগান পরিদর্শন ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। কৃষি অফিসের মাধ্যমে শিক্ষিত বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ঋণের সহায়তা করলে অনেক যুবকই জসীমের মতো ফলের চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়