মঈন উদ্দীন: [২] রাজশাহী মহানগরীর টিকাপাড়া জামে মসজিদের মসজিদ কমিটিকে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর নামে তিনটি চিরকুটে ক্ষুদে বার্তা প্রদানের মাধ্যমে হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে টিকাপাড়া মসজিদ কমিটির সদস্য ও নামাজ পড়তে আসা সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
[৩] প্রদানকৃত প্রথম চিরকুটে বাংলায় লেখা রয়েছে, ‘টিকাপাড়া মসজিদের কমিটি পরিবর্তন করুন।’ এরপর ইংরেজিতে লেখা রয়েছে ‘আইএস’, পরে লেখা আছে- ‘হুমকি’। ১২ নভেম্বর দ্বিতীয় চিরকুট দেওয়া হয়। তাতে লেখা রয়েছে, ‘চোর কমিটি পরিবর্তন করুন।’ সেখানেও ‘আইএস’ ও ‘হুমকি’ লেখা রয়েছে।
[৪] সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর প্রদানকৃত তৃতীয় চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘মসজিদ কমিটি পরিবর্তন করুন। ছোট হুমকি বড় পরিণতি হয়।’ এই চিরকুটেও ‘আইএস’ লিখে পাশে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে এবং নিচে একটি আরবি হরফের মতো পেচানো স্বাক্ষর রয়েছে। এবিষয়ে টিকাপাড়া মসজিদের মাদ্রাসা কমিটির সদস্য ও নিয়মিত মুসল্লি মো. সেলিম কচি বলেন, ‘তিন তিনটি চিরকুট পেয়েছে মসজিদ কমিটি। এনিয়ে বেশ আতঙ্কেই রয়েছি।’
[৫] তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় টিভি পত্র-পত্রিকায় দেখি মসজিদে বোমা হামলা হয়েছে। বলা যায় না, কখন কে কোন ঘটনা ঘটায়। তাই বেশ আতঙ্কের মধ্যে থেকেই মসজিদে নামাজ পড়তে হচ্ছে। ওই মসজিদের নাসিমুল হক নামের আরেক মুসল্লি বলেন, ‘কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বার বার বলার পরও তারা এ বিষয়টি গায়েই লাগাচ্ছেন না। বিষয়টি ছোটভাবে দেখলে তো হবে। কোন ঘটনা ঘটে গেলে এর দায় কি তারা এড়াতে পারবেন? বলে প্রশ্ন ছোড়েন।’
[৬] গত মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল বারি। তিনি জাগো, ‘গত ৫, ১২ ও ১৯ নভেম্বর পর্যায়ক্রমে তিনটি চিরকুট প্রদান করা হয়েছে। এই চিরকুট গুলো টাকার মধ্যে মুড়ানো অবস্থায় দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছে। প্রতি জুম্মার নামাজের পর দানবাক্সের টাকা গনণার সময় এই চিরকুটগুলো পাওয়া গিয়েছে। তবে গত শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) এধরনের আর কোন চিরকুট আসেনি।’
[৭] এবিষয়ে কথা হয় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আইনাল হক পিটারের সাথে। তিনি বলেন, ‘রাতে সভাপতি সাহেবের সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আগামীকাল (১ ডিসেম্বর) মসজিদ কমিটির একটি জরুরী সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে সকলের সাথে মতবিনিময় করে এবিষয়ে একটি আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
[৮] আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এটি হয়তোবা এলাকার কোন ছোট ছেলেরা ফাইজলামি করে টাকার মধ্যে চিরকুট লিখে পাঠিয়েছে। কিন্তু পরপর তিনটি চিরকুট আসায় আমরা বিষয়টি সিরিয়সলি নেয়। এছাড়াও তিন-চার দিনের জন্য আমি রাজশাহীর বাইরে অবস্থান করায় এ বিষয়ে বসে আলাপ করা হয়নি। আগামীকাল (১ ডিসেম্বর) এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আশা করছি।’
[৯] এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এঘটনায় কেউ কোন প্রকার অভিযোগ দেয় নাই। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই পুলিশকে জানানো উচিৎ বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।’ সম্পাদক: শান্ত মজুমদার