ডেস্ক রিপোর্ট: অর্থনৈতিক কূটনীতিতে গুরুত্ব দেয়ায় এবং উদার নীতি গ্রহণ করায় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনীতে আজ এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগকারীদের সকল সুবিধা নিশ্চিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ সরকার। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ -বিডার আয়োজনে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে চলছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২১। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ২ দিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে আইন সংশোধন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, অর্থনীতি অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, আইটি পার্ক গড়া, ডিজিটালাইজেশনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
তিনি জানান, অর্থনৈতিক কূটনীতিকে গুরুত্ব দেয়ায় এরই মধ্যে নানা সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ।
বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিতে প্রস্ততি নিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ২৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলেও জানান।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বিনিয়োগের জন্য তার সরকার ১১টি খাতকে চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো- অবকাঠামো, পুঁজিবাজার ও আর্থিক সেবা, তথ্য ও প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, চামড়া, স্বয়ংক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল, কৃষি পণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ, পাট ও বস্ত্র এবং সমুদ্র অর্থনীতি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লব থেকে সুবিধা আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের আইটি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য নিয়েছি।
শুধু সশরীরে নয়, শীর্ষ সম্মেলনে ভার্চুয়ালিও যোগ দিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা। সম্মেলন থেকে দেশের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা, ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি, অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুযোগ সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন বিনিয়োগে আগ্রহীরা।
সম্মেলনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ভারত, সোদি আরব, তুরস্ক, মালায়েশিয়াসহ ১৫ দেশের ২ হাজার ৩৩২ জন নিবন্ধন করেছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বন্দরসহ বহু বড় বড় প্রকল্পের কাজ শেষের পথে। অবকাঠামোগত এসব উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশে এখন পুরোপুরি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। এখানে ব্যবসা করে বিদেশে মুনাফা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এ দেশে বিনিয়োগ করতে পারে।
তৈরি পোশাকসহ, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, আইসিটি, প্লাস্টিক, চামড়াজাতীয় পণ্যসহ বাংলাদেশে কয়েকটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন হচ্ছে।
সালমান এফ রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশ আগের মতো নেই। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক বাংলাদেশ। যেখানে বিনিয়োগে সব ধরনের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেরেমি জার্গেনস, জাপান সরকারের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারোর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তা ইতো নাওকি, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার রেন হং বিন, ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প, কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স, খাদ্য ও পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন এবং টেক্সটাইলের মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল প্রমুখ।