মঞ্জুরে খোদা টরিক
‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহŸানে ডিসেম্বরের ৯-১০ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গণতন্ত্র সম্মেলন ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি’র তালিকায় বাংলাদেশ নেই।’ ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি’র আলোচনার বিষয়: [১] গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং কর্তৃত্ববাদ প্রতিহত করা। [২] দুর্নীতি চিহ্নিত করা ও প্রতিহত করা। [৩] মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ইতিবাচক প্রচারণা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সারাবিশ্বে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি হুমকির মুখে। সরকারের ওপর জনগণের অবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক মেরুকরণের ফলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও রীতির বিরোধিতা করে- এমন নেতৃত্বের উত্থান হচ্ছে। গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়? বৈশ্বিক ব্যবসায়িক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইকোনোমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের ২০২০ সালের গণতন্ত্র সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ ‘হাইব্রিড রেজিম’ বা মিশ্র শাসনের দেশের তালিকায় রয়েছে। হাইব্রিড রেজিম হচ্ছে, যেসব দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা রয়েছে, নিয়মিত নির্বাচন হলেও রাজনৈতিক দমন পীড়নও চলে এবং কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা রয়েছে। সংস্থাটির মতে ২০১৯ বছরের গণতন্ত্রের তালিকায় ১৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ৮০তম। সূত্র: বিবিসি।
বিশ্বের দেশে দেশে গণতন্ত্র-মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা চর্চা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মায়াকান্না নিয়ে অনেক কথা আছে। বিভিন্ন দেশে নিজেদের পছন্দের শাসক বসাতে-রাখতে হত্যা-ক্যু নানা অপকর্মে তাদের জুড়ি নেই। খুন,সন্ত্রাস, উচ্ছেদ, উদ্বাস্তু, সম্পদ ধ্বংস ও মানবধিকার লঙ্ঘনে তারা নিজেরাই কাঠগড়ায় আছে। তারাই আবার গণতন্ত্র সম্মেলনের আহŸান করছেন। এ জন্য পুরো দেশকে নয়, দায়ী করছি সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের। তবু স্বাগত জানাই তাদের- গণতন্ত্রের এই জয়গানকে। কিন্তু বাংলাদেশ এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায়নি সেটা শাসকের জন্য লজ্জার-অপমানের! কিন্তু আমাদের শাসক কি দাবি করবেন, বাংলাদেশ হচ্ছেÑ গণতন্ত্রের মডেল? যুক্তরাষ্ট্রকে আপনারা নানাভাবে অভিযুক্ত করতে পারেন, কিন্তু আপনারা তাদের কোনো দাবিকে অস্বীকার করবেন? বাংলাদেশের শাসকরা কি নিজ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিজেদের অনীহা-অযোগ্যতার কথা অস্বীকার করতে পারেন? লেখক ও গবেষক
আপনার মতামত লিখুন :