মারুফ কামাল খান
[১] দেশদ্রোহীদের ক‚টচালে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর তাঁকে ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করা জাতিকে দুশো বছর গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ থাকতে হয়েছিলো। [২] তেমনই আরেকজনের কথা বলি। তিনিও যেন একালের সিরাজউদ্দৌলা। প্রবল ঝড়-ঝাঁপটায় টিমটিম করে এখনো জ¦লছেন জাতীয় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের কম্পিত শিখা হয়ে। আধিপত্যের সঙ্গে আপোস করে ঘরে বসে থাকলে তাঁর কিছুই হতো না।
[৩] তিনি দেশের জন্য আর দেশের মানুষের জন্য লড়েছেন। তাঁকে নিয়েও কম ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করা হয়নি। নিজের জীবনকে তিনি বিপন্ন করেছেন বারবার কিন্তু কখনো মাথা নোয়াননি। [৪] তাঁর কণ্ঠকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করে আনা হচ্ছে। বিতর্কিত মামলার রায়ে বন্দী রেখে বিনা চিকিৎসায় তাঁকে জটিল অবস্থায় আনার পর জেলের বাইরে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই অনুমতি যখন দেওয়া হলো তখন আর তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। [৫] কল্পিত ও অসত্য অভিযোগ ও প্রতিহিংসার ওপর দাঁড়িয়ে তাঁকে সুপরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে ক্ষমতাকে পুরোপুরি প্রতিদ্বদ্বিতাহীন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
[৬] এই অবস্থায় দেশের মানুষ গভীরভাবে উৎকণ্ঠিত। আর কারও নামে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ এমন করে জেগে উঠেনি। দলীয় গণ্ডির ঊর্ধ্বে উঠে সকলেই আজ একজন মানুষের জন্য গভীর উৎকণ্ঠায় বিনিদ্র রাত যাপন করছেন। [৭] যারা তাঁর প্রাণরক্ষা ও সুচিকিৎসার অধিকার রক্ষায় সোচ্চার হয়েছেন, তাদের প্রতি অপরিসীম কৃতজ্ঞতা। [৮] তাঁর অবর্তমানে এ দেশের এবং এই দেশের মানুষের পরিণাম চিন্তা করে আমি শিউরে উঠি। এটুকু আলো, এই কম্পিত শিখাটাও নিভে গেলে এক নিকষকালো অবারিত অন্ধকার। [৯] ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নাই’ যে দেশের পুরানো প্রবচন, সে দেশে আমি খুব নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, তাঁর স্মরণে একদিন কংক্রিটে নির্মিত হবে স্মৃতির মিনার। কিন্তু এ জাতি যে দুর্বিপাকে পড়বে, এ দেশ যা হারাবে তা’ তো ফিরবে না সহজে। [১০] তাই কোনো রাজনীতি নয়, মানবতার দাবিতে, জীবনরক্ষার তাগিদে সোচ্চার হওয়ার, যার যা করার তা’ করতে হবে শিগগিরই এবং এখনই। maruf kamal khan-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।