জান্নাতুন নাঈম প্রীতি
বাঙালির কাছে জন্মদিনে লুঙ্গি উঁচিয়ে নাচা পরীমণি খ্যাত কিন্তু সাকিব আল হাসানের স্ত্রী শিশির বেশ উৎকৃষ্টই ছিলেন এদ্দিন, যতোক্ষণ পর্যন্ত তার নিজের মতামত ছিলো না। কিন্তু এখন ক্রিকেট নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন। অথচ এখন পর্যন্ত কখনো একজন নারীবাদীকেও বলতে শুনিনি, শিশিরের সোশ্যাল মিডিয়ার ভেরিফাইড নামটি ‘সা’কিব উম্মে আল হাসান’ কেন? এতো আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে পড়ে নিজের চমৎকার নামটা তিনি হারিয়ে ফেললেন কেন? ঠিক কী কারণে নিজেকে সাকিবের বউ বলেই পরিচয় দেওয়াটা উচিত বলে মনে হলো তার? নারীর নাম পদবি একদমই তুচ্ছ ব্যাপার নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুরুষতান্ত্রিকতার বর্বর ইতিহাস। সেই ইতিহাসে নারী পুরুষের অর্ধেক, সম্পত্তির ভাগে পুরুষের অর্ধেক, বুদ্ধিতে খাটো, এসব মিথের মতোই নামের ঘাড়ে ভ‚তের মতো, প্রভুর মতো ওঠে আছে। জন্মের পর বাপের নামের অর্ধেক ‘জাহানারা সরকার’ বিয়ের পরে হয়ে যান ‘জাহানারা খালেক’।
যুদ্ধে পাওয়া নারীরা যেমন গণিমতের মাল, যুদ্ধ না করেও পরিবার থেকে তারা হয়ে ওঠেন বাপের মাল, স্বামীর মাল। একবিংশ শতাব্দীতেও বাপ আর স্বামীর মাল হওয়া ছাড়া বাঙালি নারীর অর্জন কী? অর্জন হলো চাকরিতে, কর্মক্ষেত্রে উঁচু পদে ওঠলে ‘শুয়ে শুয়ে পেয়েছে’ শোনা। আর মাঝে মাঝে বেফাঁস কথা বলে ফেললে সমালোচনা হলেও বলা হবে- সাকিবের বউ অমুক বলেছে! মানে বউটা যে আরেকটা মানুষ তাও তুচ্ছ! বাঙালি যখন কারও সমালোচনা করে তখনো তার পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্য লুকাতে পারে না! হে বাঙালি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ, আপনারা সাকিবের বউকে দেখেন, সেই বউয়ের বোকামি দেখেন, আমরা কর্মক্ষেত্রে উঁচু জায়গা পেলে আমাদের শোয়া দেখেন, কিন্তু নিজেরা নিজেদের দেখেন না কেন? jannatun nayeem prity-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।