শিরোনাম
◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ০৭:০৪ বিকাল
আপডেট : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১১:২৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] পূজামন্ডপে সহিংসতার সাথে জঙ্গিবাদের কোন সম্পর্ক নাই: সিটিটিসি প্রধান

সুজন কৈরী: [২] পূজামন্ডপে মূর্তির পায়ের কাছে কোরআন রাখার অভিযুক্ত ইকবাল একজন ভবঘুরে। ইকবালসহ অনদের গ্রেপ্তার করে প্রকৃত রহস্য উৎঘাটনের সফল সমাপ্তির চেষ্টা করা হচ্ছে।

[৩] কুমিল্লার পূজা মন্ডপে মূর্তির পায়ের কাছে কোরআন এর ছবি ফেসবুকে যে পোস্ট করেছিলো তার নাম সুজন। এই ছোট্ট ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে অন্তত্য ১৬টি জেলায় দ্রুত সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তবে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটে তার সাথে জঙ্গিবাদের কোন সংশ্লিষ্টতা খুজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

[৪] শনিবার তেজগাঁওস্থ এফডিসিতে ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বৃদ্ধিতে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার’ নিয়ে এক ছায়া সংসদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

[৫] আসাদুজ্জামান বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ আজ সারা বিশ্বে যে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও উদ্বিগ্ন। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পারিবারিক শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরিবারের মাধ্যমে তরুণ জনগোষ্ঠীকে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। যাতে ফেসবুকে গুজব তাদেরকে বিপথগামী করতে না পারে।

[৬] তিনি আরও বলেন, অনেক মেধাবী সন্তানরাও ফেসবুকের কনটেন্ট দেখে উগ্র জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। জঙ্গিবাদী চক্র তাদের অপপ্রচার চালানোর জন্য সোশাল মিডিয়াকে বেছে নিয়েছে। যার মাধ্যমে তারা আজ অনেক তরুণকে বিপথগামী করছে। তবে জঙ্গিবাদের অপতৎপরতা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

[৭] সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ক্রমেই বেড়ে চলছে। অপপ্রচারকারীরা নামে-বেনামে ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক, আইপি টিভি, অনলাইন পোর্টালসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নানা রকম পেজ, গ্রুপ, ইভেন্ট খুলে যে যার ইচ্ছামতো নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হচ্ছে। তথাকথিত ব্রেকিং নিউজের নামে নানা গুজবের ভিডিও বনিয়ে গায়েবি খবর ছড়িয়ে সমাজে নানা রকম বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের দায় এড়াতে পারেনা। তবে রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা ছাড়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধ সম্ভব নয়। ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা মোটেই ঠিক না। মানুষের ধর্ম মানুষের উপর থাকা ভালো।

[৮] কুমিল্লার ঘটনার পর বড় দুটি দল একে অপরকে দোষারোপ করে আসায় প্রকৃত অপরাধীরা আড়াল হয়ে যেতে পারে। তাই ধর্মীয় সহিংসতার ঘটনার পর যে কোন মন্তব্য, বক্তব্য বিচার বিশ্লেষন করে দেওয়া উচিত।

[৯] সম্প্রতি দুর্গাপূজার সময় দুষ্কৃতিকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করছিলো। ফেসবুকে কোরআন অবমাননার উস্কানিমূলক অভিযোগের পর কুমিল্লায় মন্দিরে ভাঙচুরসহ চাঁদপুর, চৌমুহনী, পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী নিরীহ মানুষের উপর সহিংসতা চালানো হয়। এসব ঘটনা বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির উপর চরম আঘাত। বিগত সরকারের আমল থেকে শুরু করে বারবার এসব এসব সহিংসতার ঘটনার প্রধান কারণ বিচারহীনতার সংস্কৃতি। সাম্প্রদায়িক হামলার তদন্ত হয় কিন্তু বিচার হয়না। বারবার দায়মুক্তি পাওয়ার কারণে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয়ে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবার জন্য দুষ্কৃতিকারীরা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চালিয়ে আসছে।

[১০] সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হলে কারা লাভবান হয় তা উৎঘাটন করতে হবে। তাই সব শ্রেণীপেশার মানুষসহ রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবি, ইসলামিক স্কলার, মসজিদের ইমাম, পুরোহিত, জনপ্রতিনিধিদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এজন্য দরকার সামাজিক আন্দোলন।

[১১] সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ৮ দাফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন। সেগুলো হলো- দল মত নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে রাজনৈতিক ঐক্যমত গড়ে তোলা। ধর্মীয় অবমাননার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে করা। এক রাজনৈতিক দল আরেক রাজনৈতিক দলের উপর ব্লেইম গেইমের সংস্কৃতি পরিহার করে অপরাধী যে দলেরই হোকনা কেন তাকে বিচারের মুখোমুখী করা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দায়িত্বশীল ব্যবহারে উৎসাহিত করা। সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করে যারা সংঘাত উস্কে দিয়েছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। একইসাথে অপরাধীদের দৃশ্যমান বিচার করা। তবে কোন অবস্থাতেই নিরপরাধ ব্যাক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।

[১২] সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে একটি নির্দেশনা বা গাইডলাইন তৈরি করা। দেশের খ্যাতিমান আইসিটি বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, আইসিটি বিভাগ ও বিটিআরসির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি এ বিষয়ে গাইডলাইন তৈরি করতে পারে। সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করে এরূপ ছবি বা বার্তা যেন পোস্ট করতে না পারে সে বিষয়ে ফেসবুক সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতা করা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাতে কেউ ভূয়া একাউন্ট চালাতে না পারে সেজন্য সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করা।

[১৩] বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার বিতার্কিকদের পরাজিত করে মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে।

[১৪] প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক আব্দুল্লাহ তুহিন, সাংবাদিক আলাউদ্দিন আরিফ, সাংবাদিক অনিমেষ কর ও সাংবাদিক রেযা খান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়