মো. রেদওয়ানুল হক: [২] গত ৩ দিনের বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে জেলার শতশত বিঘা আমন ক্ষেত মাটির সাথে নুয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আমন চাষিদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি ও আলু চাষিরা। বুধবার (২০ অক্টোবর) সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানা যায়।
[৩] গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই ঝড়ো বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও জেলার প্রায় শতাধিক হেক্টর জমির আমন খেত মাটিতে নুয়ে গেছে। দশ থেকে পনেরো দিন পরে যে ধান কৃষকের গোলায় উঠত কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টিতে কৃষকের বুক ভরা স্বপ্ন এক নিমেশেই ভঙ্গ হয়ে গেছে। এতে এবার আমন মৌসুমে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
[৪] জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৩৭হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে।
[৫] সদর উপজেলার নারগুন, বেগুনবাড়ী, সালন্দর, আউলিয়াপুর, বড়গাঁও, জগন্নাথপুর, দৌলতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ আধা-পাকা ধানের গাছ ও সবজি খেত পানিতে ডুবে আছে। অনেক কৃষক তাঁদের ফসল বাঁচাতে খেতে জমে থাকা পানির কারণে ধানের শীষ পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় গোছা বেঁধে ধানগাছ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
[৬] সদর উপজেলার নারগুন সেন্টারহাট এলাকার কৃষক সরিফুল ইসলাম বলেন, আর কয়েকদিন পরই ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু হতো। কিন্তু হঠাত এই বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমাদের খেতের ৭০-৮০ শতাংশ জমির আমন ধানের গাছ মাটিতে হেলে পড়েছে।
[৭] আউলিয়াপুর এলাকার কৃষক আব্দুল্লাহ হক বলেন, কয়েকদিন পরে নুয়ে যাওয়া ধান গাছ গুলোতে পোকার আক্রমণ শুরু হবে। পরে ধানের পরিবর্তে শুধু সুষ্ক ছিটা পাওয়া যাবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো কি আমরা?
[৮] বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের হরিনমারি জুগিহার গ্রামের কৃষক সোহেল রানা জানান, তিন বিঘা জমিতে আগাম ব্রি সুমন স্বর্ণা জাতের ধান লাগিয়েছি। মাঠে ধান পেকে গেছে। ৪-৫ দিন পরে ধান ঘরে তোলার কথা ছিল। এমন অসময়ের বৃষ্টিতে পাকা ধান শুয়ে পড়েছে। এতে ধান তুলতে পারলেও সেসব ধানের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে। এই কৃষক বলেন সার ও কীটনাশক সহ বিঘা প্রতি এবার খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এখন লোকসান হবে ৮ থেকে ১০হাজার টাকার মত।
[৯] জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়নি। এই নিয়ে কাজ চলছে। এর পাশাপাশি আলু খেতেও পানি জমে থাকায় আলু চাষিরা সামান্য ক্ষয়- ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :