খালিদ খলিল: গত ১২ তারিখ ছিলো আন্তর্জাতিক ‘ডিম দিবস’। ডিম আমাদের খাদ্য তালিকার অপরিহার্য একটি। আমরা ডিম খাই কিন্তু জানি কি ডিমের খোসা থেকেও মানব সভ্যতার ইতিহাস পাওয়া গেছে? আমরা জানিÑ পাথর বা লোহার ওপর আঁকা বিভিন্ন সংকেত চিহ্ন বা প্রতীকের আবিষ্কারের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আগেই আদি যুগের মানব সভ্যতার ইতিহাসের সন্ধান লাভ করেছেন। কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন পাথর বা লোহা নয়, স্রেফ ডিমের খোসায় আদিকালের ইতিহাস। ডিমের খোসার ওপর সেই আদিকালে মানুষ কীভাবে রেখাঙ্কনের মাধ্যমে ভাববিনিময় করতো, নিজেদের ইতিহাস লিখে রাখতো, তাই এখন বেরিয়ে আসছে। বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আফ্রিকার পাথরঘেরা ডিয়েপক্লুফ এলাকা থেকে উটপাখির ডিমের খোসার ভাঙা যে অংশগুলো আবিষ্কার করেছেন, সেগুলোর ওপর রয়েছে দুটো লাইনে গোলাকৃতি রেখাচিহ্ন।
১৯৯৯ সালে ওই ডিমের খোসাটির সন্ধান পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে অনুমান করছেন, এটি ৬০ হাজার বছর আগের। ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সের গবেষণায় পরে বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তারা আশা করছেন। ফ্রান্সের তালেঁসের বর্দো ইউনিভার্সিটির ড. পিয়েরে-জঁ তেসিরে বিবিসিকে বলেন, ‘ডিমের খোসাটিতে আঁকা রয়েছে পাশাপাশি দুটো রেখাচিহ্ন, রেখা দুটো আবার চক্রাকারে ঘোরানো। আমরা পুরো ডিমের খোসাটি পাইনি বলে কিছুটা অস্পষ্টতা রয়েই গেছে। ওই রেখাগুলো পরস্পরকে ডানদিকে ক্রস করেছে, আবার তির্যকভাবেও ক্রস করেছে।’ তিনি বলেন, রেখার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে আদিকালের মানুষ পরস্পরকে কিছু একটা বোঝাতে চেয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সম্ভবত তারা নিজেকে বা নিজেদের গোত্রকেও চিহ্নিত করেছে ওইসব রেখাচিহ্ন দিয়ে। কোথায়, কখন এই রেখাচিহ্ন দিয়ে এমনভাবে ভাব প্রকাশ করা হতো গবেষণা থেকে তা বেরিয়ে এলে মানুষের আদি অবস্থান সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।