সাকিব এ চৌধুরী: দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিষ্ঠায় মওলানা আব্দুল খান ভাসানীর অবদান থাকলেও বর্তমানেও পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শুধু তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়। কীভাবে কোন পরিস্থিতিতে মওলানা ভাসানীর নাম দৈনিক ইত্তেফাক থেকে ‘উধাও’ হয়ে যায় সেটার একটা বর্ণনা পাওয়া যায় মাহমুদুর রহমান মান্নার ‘বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ বইয়ে। সে বইয়ে তিনি লিখেন, ‘তদানীন্তন পত্রিকাগুলো সরকার বিরোধী সংবাদ প্রকাশে আগ্রহী না হওয়ায় মওলানা ভাসানী নিজস্ব পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি নেন।
সে অনুযায়ী প্রদেশিক পরিষদের সদস্য আছগর হোসেনের ঢাকাস্থ ৭৭ নং মালিটোলায় অবস্থিত ছাপাখানা হতে সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকা প্রকাশ শুরু হয় ১৯৪৯ সালের ১৫ আগস্ট থেকে। পরবর্তীতে ইত্তেফাক ৯ নং হাটখোলা রোডের পেরামাউন্ট প্রেস থেকে ইয়ার মোহাম্মদকে প্রকাশক ও মুদ্রাকর এবং ৯৪ নবাবপুর রোডের ঠিকানায় তোফাজ্জল হোসেনের (মানিক মিয়া) সম্পাদনায় প্রকাশিত হতে থাকে। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মওলানা ভাসানীর নাম থাকে।
১৯৫৪ সালের মার্চে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সাপ্তাহিক ইত্তেফাককে দৈনিক করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ১৯৫৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইত্তেফাক পূর্বের ব্যবস্থাপনায় দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অর্থাৎ দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা ভাসানী, ইয়ার মোহাম্মদ খান প্রিন্টার ও পাবলিশার এবং তোফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া) সম্পাদক ছিলেন। নির্বাচনের পর সরকারি ষড়যন্ত্রে ১৯৫৪ সালের ১৪ মে রাতের অন্ধকারে ইয়ার মোহাম্মদের অজ্ঞাতসারে সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াই ইত্তেফাকের প্রিন্টার ও পাবলিশার হয়ে যান। প্রতিষ্ঠাতার বদলে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে শিরোনামায় মওলানা ভাসানীর নাম ছাপা হতে থাকলেও কিছুদিনের মধ্যেই তাও উধাও হয়ে যায়। ফেসবুক থেকে