সোহাগ হাসান: [২] ঋতু পরিবর্তনের কারণে শ্বাসকষ্ট, সর্দি-জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, পেটের পিড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে শত শত শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। সরেজমিনে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল, নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল আভিসিনা, মেডিনোভা, কমিউনিটি হাসপাতাল, মইন উদ্দিন হাসপাতাল, শাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়ালসহ বিভিন্ন হাসপাতালের শিশু বিভাগে শিশু ও তার স্বজনদের ভিড় চোখে পরার মত। শিশুদের পাশাপাশি বৃদ্ধরাও আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন নতুন নতুন রোগীর চাপ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে। এদিকে এ অবস্থায় শিশুর যত নিতে অভিভাবকের আরও নজর ও মনযোগী হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
[৩] সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আশা পৌর এলাকার স্লুইজ গেইট মহল্লার মগরব আলী তার ৯ মাসের শিশু মেঘলাকে ১১দিন যাবৎ ঠান্ড ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। বর্তমানে মেঘলা কিছুটা ভালো রয়েছে। রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের ২২দিনের শিশু জুনায়েদ ঠান্ডা ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে।
[৪] কামারখন্দ উপজেলায় নূর ইসলামের ২মাসের পুত্রসহ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন শিশু সদর হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ৪র্থ তলার শিশু বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে। বেডের থেকে রোগীর চাহিদা বেশি হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে এসব রোগীরা। প্রকৃতির এ ছন্দপতনে খেই হারিয়ে ফেলেছে মানুষ। ফলে এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। আগের তুলনায় প্রায় তিনগুন রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতাল গুলোতে। রোগীর চাপ বেশি হওয়ায অভিভাবকরা প্রতিদিন শয্যা ফাঁকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার অসহায় হয়ে হাসপাতালের মেঝেতেই জায়গা করে থাকছেন। কেউ আবার সরকারি হাসপাতলে জায়গা না পেয়ে অন্যান্য ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি করছেন।
[৫] সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স জোসনা খাতুন বলেন, আগের তুলনায় বর্তমানে রোগীর চাপ বেশি, ঋতু পরিবর্তনের জন্য এখন রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে। আমরা নিয়মিত শিশুদের দেখভাল করছি।
[৬] সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত ডা. ফয়সাল আহমেদ ও শামিমুল ইসলাম বলেন, আগের থেকে ৩ গুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে, আগামীতে আরও বাড়তে পারে। তবে এসব শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের সজাগ থাকতে হবে। ঠান্ডায় ছোট বাচ্চাদের গরম কাপড় পরিধান করাতে হবে। নিয়মিত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
[৭] এ বিষয়ে শিশু বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সুমনা লায়লা বলেন, ছোট্ট এই শিশুদের মায়ের বুকের দুধ, তরল জাতীয় খাবার দিতে হবে। যেসব বাচ্চা খেতে পারে তাদেরকে ভিটামিন যুক্ত খাবার দিতে হবে। এসি থেকে দুরে রাখতে হবে। ভয়ের কারণ নেই। ঋতু পরিবর্তনের কারণে এই রোগগুলোয় বেশিরভাগ আক্রান্ত হয় বৃদ্ধ ও শিশুরা। এছাড়াও নিয়মিত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার জন্য তিনি উল্লেখ করেন