রিয়াজুর রহমান: [২] হালদা নদীতে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে মা মাছ এখানে ডিম ছাড়ে। উৎসবের আমেজে হাজার হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করে আহরণকারীরা। তাই দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র খ্যাত হচ্ছে এ হালদা নদী। কিন্তু গত চার বছরে এই প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী থেকে ৩১টি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে।
[৩] সর্বশেষ সোমবার (৪ অক্টোবর) হালদা নদীর রামদাস মুন্সির হাট এলাকায় স্থানীয় এক ব্যক্তি ১টি মৃত ডলফিন ভাসতে দেখে নৌ পুলিশকে খবর দেয়। পরে নৌ পুলিশ গিয়ে ডলফিনটি উদ্ধার করে।
[৪] ডলফিনটি পচে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করার পর নৌ পুলিশের সহযোগিতায় ডলফিনটি স্থানীয়ভাবে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
[৫] এর আগে হালদা নদী থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০টি ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে।
[৬] এছাড়া ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে হালদায় ১৮টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পাওয়া যায় আরও ১০টি মৃত ডলফিন। কর্ণফুলী নদীতেও এ পর্যন্ত দুটি ডলফিনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
[৭] স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মূলত তিন কারণেই ডলফিনের এ দুর্গতি। যেমন- ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবহার, কারেন্ট জালে মাছ ধরা এবং অবৈধ মৎস্যশিকারিদের কারণেই ডলফিনের এ দুর্গতি।
[৮] এদিকে হালদা নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবহার ও কারেন্ট জালে মাছ ধরা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করছে প্রশাসন। কিন্তু তাতেও সুফল মিলছে না। নিষিদ্ধ কারেন্ট জালে আটকে মারা যাচ্ছে ডলফিন।
[৯] হালদা নদী গবেষক প্রফেসর ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, গত চার বছরে এখন পর্যন্ত ৩১টি ডলফিন মারা গেল হালদা নদীতে। কয়েক দিনের ব্যবধানে দু'টি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়।
[১০] বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, হালদা নদীতে গাঙ্গেয় ডলফিনের বাস। তবে শুধু এই ডলফিনই নয়, আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে সব ধরনের ডলফিনই সংরক্ষিত।
[১১] তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী ডলফিন হত্যা করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া মৃত ডলফিনের দেহাবশেষ অবৈধভাবে কারও কাছে পাওয়া গেলেও সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডই হতে পারে। সম্পাদনা: হ্যাপি