শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ০৫ অক্টোবর, ২০২১, ১২:২৪ রাত
আপডেট : ০৫ অক্টোবর, ২০২১, ০৩:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ১৮ বছর পর ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে কালু ও আজিজুলের ফাঁসির রায় কার্যকর

আখিরুজ্জামান সোহান: [২] চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় দুই নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুল এবং একই গ্রামের মিন্টু ওরফে কালু। নিউজ বাংলা ২৪

[৩] যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতেই দুজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান।

[৪] চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে। জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত দুজনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য কয়েক দিন ধরে আমরা প্রস্তুতি নিই। স্বজনেরা শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে শেষবারের মতো তাদের দুজনের সঙ্গে দেখা করেন।

[৫] ‘দুই পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষের সঙ্গে তাদের দেখা করিয়ে দিয়েছি। তাদের ইচ্ছা অনুয়ায়ী শনিবার গরুর কলিজা ও ইলিশ মাছ খাওয়ানো হয়। রোববার গ্রিল ও নান রুটি আর সোমবার মুরগির মাংস, দই ও মিষ্টি খাওয়ানো হয়।’

[৬] বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে এই ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে টানা ১৮ বছরের প্রতীক্ষার অবসানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন হত্যার শিকার দুই নারীর স্বজনরা।

[৭] দুই খুনির ফাঁসি কার্যকরের জন্য কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ১৩ জন অস্ত্রধারী কারারক্ষী ভেতরে টহল দেন। সন্ধ্যার পর থেকেই গোটা এলাকায় পুলিশ ও র্যাবের নজরদারি বাড়ানো হয়। পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন কারাগারের ফটকেও।

[৮] তুহিন কান্তি খান জানান, দুই খুনির ফাঁসি কার্যকর করতে রাতে একে একে কারাগারে প্রবেশ করেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার, সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান।

[৯] রাতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে গোসল করানোর পর তাদের তওবা পড়ান কারা মসজিদের ইমাম। রাতেই স্বজনদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের পর তাদের খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাদের রায় পড়ে শোনানো হয়। নিম্ন আদালতের রায়, আপিল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদন নাকচ হওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়। পরে তাদের জমটুপি পরিয়ে ফাঁসির মঞ্চে নেয়া হয়। রাত ১০টা ৪৫মিনিটে প্রথমে মিন্টু ওরফে কালু, এর পাঁচ মিনিট পর একই গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুলের ফাঁসি কার্যকর হয়।

[১০] সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে চিকিৎসক টিম তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। ফাঁসি কার্যকরে ছিলেন কেতু কামার, মশিয়ার রহমান, লিটু হোসেন, আজিজুর রহমান ও কাদের নামের পাঁচ জল্লাদ।

[১১] ফরেনসিক টিম ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার পর মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান জেলার তুহিন কান্তি।

[১২] এর আগে সন্ধ্যায় খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে কালু ও আজিজুলের পরিবারের সাত সদস্য তাদের মরদেহ নিতে কারাগারে যান। এ সময় দুজনের জন্য আলাদা দুটি অ্যাম্বুলেন্স তাদের সঙ্গে ছিল।

[১৩] ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার জোড়গাছা গ্রামের দুই নারীকে রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে হত্যা করা হয়। তারা দুজন বান্ধবী ছিলেন। হত্যার আগে তাদের দুজনকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

[১৪] প্রতিবেদনে বলা হয়, গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ওই দুই নারীর গলা কাটা হয়। এ ঘটনায় এক নারীর মেয়ে বাদী হয়ে পরদিন আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দুজন হলেন একই গ্রামের সুজন ও মহি। মামলা বিচারাধীন অবস্থায় আসামি মহি মারা যান।

[১৫] ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই এই মামলায় চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও কালুকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর আসামি পক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায় বহাল রাখে।

[১৬] ২০১২ সালে ১১ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখে এবং অপর আসামি সুজনকে খালাস দেয়।

[১৭] ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান খালাসপ্রাপ্ত সুজন। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজিজ ও কালু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান, সেই আবেদন নাকচ হয়ে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়