স্বকৃত নোমান : ভারতবর্ষে জ্ঞান আমদানি হয়েছে বেশি, ভারতবর্ষের জ্ঞান রপ্তানি হয়েছে কম। কথাটা মনে হলো আইজাক বাসেভিস সিঙ্গারের একটি সাক্ষাৎকার পড়ে। তিনি বলেছেন, ‘আমি যখন ভগবদ গীতা পড়লাম, মনে হলো খুব কাছের জিনিস পড়েছি। মনে হলো আমি যদি আরো আগে পড়তাম, তাহলে কতোই না বিস্মিত হতাম, আরও কতো মুগ্ধতার জন্ম হতো, আর ঠিক এই কথা বুদ্ধের বাণী ও দূরপ্রাচ্যের অন্যান্য লেখাপত্রের ক্ষেত্রে সত্য।’ পৃথিবীর বিস্তর মহান লেখক আছেন যাঁরা ভগবদ গীতা নামের অনন্য গ্রন্থখানি পড়েননি।
অর্থাৎ ভারতবর্ষের এই জ্ঞানবৃক্ষটির ফল যথাযথভাবে রপ্তানি করা যায়নি। এর কারণ ভারতবর্ষের মৌনতা। ঝিনুকের মতো মুক্তো নিয়ে সে মৌন। নিজের গৌরব প্রচার করতে তার অনাগ্রহ। অথচ ভারতবর্ষ মুক্তহস্তে নিয়েছে। জরথ্রæষ্ট, এরিস্টটল, প্লেটো, শেক্সপিয়র, গ্যাটেকে নিয়েছে। বাইবেল আর কোরানকেও নিয়েছে। কিন্তু পাশ্চাত্য নিতে পারেনি উপনিষদকে। নিতে পারেনি কবিরকে, নানককে। আমি নিশ্চিত বাসেভিস সিঙ্গার যদি ভারতের কবির বা বাংলার লালনের পদগুলোর সন্ধান পেতেন, তবে একই কথা বলতেন : ‘আমি যদি আরো আগে পড়তাম, তাহলে কতোই না বিস্মিত হতাম, আরও কতো মুগ্ধতার জন্ম হতো।’ লেখক : কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :