মিনহাজুল আবেদীন: [২] এই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ঘটনার শিকার শিক্ষার্থী।
[৩] বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এই লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি।
[৪] তিনি বলেন, গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় তার সহপাঠী ওই ছাত্র তাকে ফোন করে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে নিজেদের বিভাগের সেমিনার গ্রন্থাগারে দেখা করতে বলেন। বেলা আড়াইটার দিকে তিনি বিভাগে যান। বেলা সোয়া তিনটার দিকে গ্রন্থাগারে এসে ওই ছাত্র আচমকাই তাকে জড়িয়ে ধরেন। সেখানে তখন অন্য কেউ ছিলেন না। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন।
[৫] তিনি সেমিনার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ওই ছাত্র বাধা দেন এবং অশালীন আচরণ করেন। তখন তিনি তাকে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই ছাত্র আবারও দৌঁড়ে এসে তার পথ আটকে যৌন নিপীড়ন করেন।
[৬] ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই ছাত্র আমাকে ধাক্কা দিলে আমি সিঁড়িতে পড়ে যাই। আমি কোনোরকমে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে ঢুকে পড়ি এবং সে গ্রন্থাগার পর্যন্ত আমার পিছু নেয়। গ্রন্থাগারে উপস্থিত আমার বড় আপুদের কাছে বিষয়টি জানালে তারা আমাকে বাসায় নিয়ে আসেন। পরে সেদিন সন্ধ্যা থেকে সে আমাকে লাগাতার ফোন করতে থাকে। আমি একবারও ফোন ধরিনি। আমি মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি যে বাসায় ফেরার পর আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাই।’
[৭] ওই ছাত্রীর ভাষ্য, ঘটনার পরদিন দুপুরে ওই ছাত্র তার বাসায় গিয়ে দরজায় সজোরে ধাক্কা দিতে থাকেন। তিনি ভবনের নিরাপত্তাকর্মীর কাছে নিজেকে ওই ছাত্রীর বড় ভাই পরিচয় দিয়ে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে এসেছে বলে জানান। এ কথা শুনে দারোয়ান তাকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেন।
[৮] এরপর ওই ছাত্র দরজার বাইরে থেকে চিৎকার করে তার নাম ধরে ডাকতে থাকেন। এ সময় গৃহকর্মী ও তিনি (ছাত্রী) ছাড়া বাসায় কেউ ছিলেন না। গৃহকর্মী বাসায় কেউ নেই বলার পরও ওই ছাত্র দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন এবং দরজা না খোলায় সিঁড়িতে বসে থাকেন। পরে দারোয়ান এসে তাকে বাসা থেকে বের করে দেন।
[৯] কিন্তু সন্ধ্যায় তিনি বাসা থেকে বের হলে ওই ছাত্র বাসার সামনের রাস্তায় পথ রোধ করে আবারও তাঁকে বিরক্ত করেন। তিনি কোনোমতে একটি রিকশায় উঠে ওই স্থান ত্যাগ করেন।
[১০] জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটা মিসবিহেভ (অসদাচরণ) করে ফেলেছি। আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি এমনটা করে ফেলেছি। এর জন্য আমি অনুতপ্ত।’
[১১] এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কাল বৃহস্পতিবার সকালে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত দুজনকেই প্রক্টর কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য যা করা দরকার, তা করা হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা দুই পক্ষেরই সহযোগিতা কামনা করি।’ সম্পাদনা : খালিদ আহমেদ