জাফর ওয়াজেদ: নোবেলজয়ী কবি পাবলো নেরুদা। পঁচাত্তর পরবর্তী ক্ষমতা দখলকারি সামরিকজান্তা শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছিলেন তিনি আমাদের প্রেরণা। ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মৃত্যু ঘটে তাঁর। ১৯০৪ সালের ১২ জুলাই চিলির পাররাল শহরে জন্ম হয় নেরুদার। তার প্রকৃত নাম ছিলো নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো। পাবলো নেরুদাকে বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী লেখক মনে করা হয়। তার রচনা অনূদিত হয়েছে একাধিক ভাষায়। নেরুদার সাহিত্যকর্মে বিভিন্ন প্রকাশ শৈলী ও ধারার সমাবেশ ঘটেছে। তিনি রচনা করেছেন পরাবাস্তববাদী কবিতা, ঐতিহাসিক মহাকাব্য, এমনকি প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইস্তেহারও।
১৯৭১ সালে নেরুদাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
কলম্বিয়ান ঔপন্যাসিক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস একদা নেরুদাকে ‘বিংশ শতাব্দীর সকল ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি’ বলে বর্ণনা করেন। উল্লেখ্য, ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিন পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় পাবলো নেরুদার। কিন্তু পরবর্তীকালে এই মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। দাবি করা হয়- ক্যান্সারে মৃত্যু হয়নি নেরুদার। নেরুদার দেহাবশেষ থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে আন্তর্জাতিক গবেষক দল এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে সন্দেহ আর অবিশ্বাসের মধ্যে একদল ফরেনসিক গবেষক দাবি করেছেন, প্রস্টেটের ক্যান্সারে মৃত্যু হয়নি নেরুদার। এর ফলে ১৯৭১ সালে সাহিত্যে নোবেলজয়ী নেরুদার মৃত্যু ঘিরে শুরু রহস্য। ঠিক কী কারণে নেরুদার মৃত্যু হয়েছে, সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি গবেষক দল। তবে তাকে পরিকল্পিত খুনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেন না তারা।
১৯৭৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর জানানো হয়েছিলো নেরুদা প্রস্টেটের ক্যান্সারে মারা গিয়েছেন। কিন্তু একনায়ক অগাস্টো পিনোশের ক্ষমতা দখলের দুই সপ্তাহের মধ্যে নেরুদার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিলো তখনই। নেরুদার প্রাক্তন গাড়িচালক ম্যানুয়েল আরায়া দাবি করেছিলেন- ক্যান্সার নয়, বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে এই কবিকে। তার দাবি, নেরুদা যখন ঘুমে ছিলেন, তখন তার দেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিলো। আর এতেই মৃত্যু ঘটে নেরুদার।
তথ্যসূত্র : Adam Feinstein, Pablo Neruda: A passion for life, Bloomsbury, 2004.
লেখক : মহাপরিচালক, পিআইবি
আপনার মতামত লিখুন :