শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৪:১২ দুপুর
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৪:২৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] নামিদামি ব্র্যান্ডের মোড়কে নকল ওষুধ বিক্রি, গ্রেপ্তার ৩

সুজন কৈরী :[২] রাজধানীর বাবুবাজার এলাকায় বিভিন্ন ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি নামিদামি ব্র্যান্ডের মোড়ক সম্বলিত বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ ও ক্রিম উদ্ধার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিম। নকল ওষুধ বিক্রির দায়ে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

[৩] শনিবার ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বাবুবাজার এলাকার সুরেশ্বরী মেডিসিন প্লাজার নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ল্ড ও অলোকনাথ ড্রাগ হাউস এবং পাশের হাজী রনি মেডিসিন মার্কেটের নিচতলায় রাফসান ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মেডিসিন ওয়ার্ল্ডের ফয়সাল আহমেদ, অলোকনাথ ড্রাগ হাউসের সুমন চন্দ্র মল্লিক ও রাফসান ফার্মেসির লিটন গাজী। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ওষুধ প্রশাসনের এটিএম কিবরিয়া খান ও মওদুদ আহমেদ নামের দুই কর্মকর্তা।

[৪] রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম কমিশনার (অ্যাডমিন এবং ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম বলেন, অভিযানকালে আই-পিল, নেপ্রোক্সিন প্লাস ৫০০+২০০ এম.জি, বেটনোভেট-সি, প্রোটভিট ২০সহ বিভিন্ন রোগের প্রচুর পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে।

[৫] তিনি বলেন, সব থেকে বড় কথা হচ্ছে জনগণ যে এসব নকল ওষুধ খেয়ে প্রতারিত হচ্ছে, সেখানে জনগণেরও একটি সচেতনতার দায়বদ্ধতা আছে। যেসব দোকানে ওষুধ বিক্রি হয় সেসব দোকানে ওষুধের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বৈধ ওষুধের তালিকা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেওয়া থাকে। ওষুধ কিনতে যাওয়ার সময় এসব তালিকা দেখার অধিকার সাধারণ ক্রেতাদের আছে। এছাড়া কোম্পানি ইনভয়েস প্রতিটি ফার্মেসিতে থাকে। ওষুধ বিক্রির সময় কোম্পানিগুলো এই ইনভয়েস ফার্মেসিগুলোকে দেয়। নকল ও ভুয়া ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে ফার্মেসিতে গিয়ে ক্রেতাদের অবশ্যই তালিকাগুলো দেখা উচিত। ইনভয়েস না দেখে ওষুধ কেনা উচিত নয়।

[৬] তিনি আরও বলেন, যারা নকল ওষুধ বিক্রি ও উৎপাদন করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। সামনে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইউনানি ও হোমিওপ্যাথির লাইসেন্স নিয়ে অবৈধ ওষুধ তৈরিকারীদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নিবো।

[৭] গ্রেপ্তার তিনজন সরবরাহকারী নাকি প্রস্তুতকারী জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিটফোর্ড এলাকায় তারা পাইকারি ওষুধের ব্যবসা করে। সেখান থেকে তারা সারা দেশে ভেজাল ওষুধ সাপ্লাই করে। যারা উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত আছে তাদেরও তালিকা করছি। আমাদের তালিকা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরবরাহকারী বা উৎপাদনকারী সবাইকে আমরা তালিকাবদ্ধ করছি।

[৮] ভেজাল ওষুধ তৈরি কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না জানতে চাইলে ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, বন্ধ হচ্ছে না বিষয়টি এমন নয়। এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। আমাদের পাশাপাশি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। ভেজাল ওষুধ উৎপাদন থেকে শুরু করে সরবরাহ পর্যন্ত সাইকেলটা কীভাবে কাজ করে জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ভেজাল ওষুধ বাজারজাতকরণে এ সাইকেলটাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উৎপাদনকারী কোনো না কোনো ধরনের চাহিদা বাজার থেকে পেয়ে থাকেন। তাদের নিশ্চয়ই বলা হয়, এই ওষুধ তৈরি করে দেন আমারা বাজারে চালিয়ে দেবো। তবে সাইকেলের আসল কেন্দ্র হচ্ছে মিটফোর্ড। সেখান থেকেই নকল ওষুধ দেশের সকল ফার্মেসিতে যাচ্ছে।

[৯] মিটফোর্ডে এলাকা থেকে সারা দেশে নকল ওষুধ পাঠানোকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে এবং সামনের দিনগুলোতেও অভিযান চলমান থাকবে।

[১০] দেশে কয়টি প্রতিষ্ঠান ইউনানি লাইসেন্স নিয়ে নকল ও অবৈধ ওষুধ তৈরি করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫০টির মতো রয়েছে। এগুলো অনেক সময় দেখা যায় বন্ধ থাকে। কিন্তু রাতের আঁধারে কারখানা খুলে তারা কার্যক্রম চালায়। পরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এ ওষুধ তারা সারা দেশে পাঠিয়ে দেয়।

[১১] সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ নাঈম গোলদার বলেন, অভিযানে জব্দ করা ওষুধের মধ্যে বেশিরভাগ হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন বিহীন ভেজাল ওষুধ। এর মাঝে একটি ওষুধ হচ্ছে পিডিএকটিন যা অনেক আগেই ব্যান করা হয়েছে। ভেজাল ওষুধ চিনতে পারার বিষয়ে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রারকৃত সকল ওষুধের লিস্ট আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। সেখান থেকে জনগণ এ বিষয়ে জানতে পারে। আর জনগণকে অবশ্যই ইনভয়েস নম্বর দেখে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে হবে। ইনভয়েস নম্বর হলো ওষুধের সার্টিফিকেট। যে কোম্পানি থেকে ওষুধ কেনা হয় ওই কোম্পানির ইনভয়েস ওষুধ ফার্মেসিকে সংরক্ষণ করতে হয়। তাহলে ফার্মেসিগুলো চাপের মুখে থাকবে। এতে নকল ওষুধের চাহিদা তারা দেবে না।

[১২] ভেজাল ওষুধের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, নকল ওষুধ সেবন করলে মূল সমস্যা হয় লিভার এবং কিডনিতে। সে কারণে বাংলাদেশে লিভার ও কিডনিজনিত রোগী বাড়ছে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি এ ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণ করতে। গত এক বছরে ওষুধ প্রশাসন ৪৭টি ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করেছে। আর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করেছে সাত কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়েছে ৯২টি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়