মাসুদ আলম: [২] শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাসেল চেয়েছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ইভ্যালি একনামে চিনবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানিয়েছে তিনি বিদেশে কোনো অর্থ পাচার করেনি। গ্রাহকদের পণ্য ডেলিভারি ও টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে সন্ধিহান ছিলেন। প্রায় হাজার কোটি টাকা ঞ্চণ রয়েছে তার। সব মিলেয়ে রাসেলের ৭ থেকে ৮ কেটি টাকার সম্পদ রয়েছে। রাসেল চেয়ে ছিলেন তার গ্রাহক সংখ্যা বাড়লে তিনি ধীরে ধীরে পণ্য অর্ডার দিবেন।
[৩] তিনি আরও বলেন, তার ব্যবসায় আকৃষ্ট করতে তিনি বিভিন্ন বিদেশে যান। রাসেল পরিচিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন চমকপদ বিজ্ঞাপন দিতেন। রাসেল জেনেশুনে নেতিবাচক স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেন।
ব্যবসায়িক বিক্রি বাড়াতে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত চাহিদা তৈরি হয় এ ধরনের পণ্যকে বেছে নেয় ইভ্যালি। যেমন- মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, এসি, মোটরবাইক, গাড়ী, গৃহস্থলীপণ্য, প্রসাধনী, প্যাকেজ ট্যুর, হোটেল বুকিং, জুয়েলারী, স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী ও ফার্নিচার ইত্যাদি। এসব পণ্যের মূল্য ছাড়ের ফলে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানের বিশাল আকারে লায়াবেলিটিস তৈরি হয়।
[৪] রাসেল ও তার স্ত্রীর ব্যবসায়িক অপকৌশল ছিল নতুন গ্রাহকের উপর দায় চাপিয়ে দিয়ে পুরাতন গ্রাহক ও সরবরাহকারীর দায়ের (লায়াবেলিটিস) অল্প অল্প করে পরিশোধ করা। অর্থাৎ ‘সায় ট্রান্সফার’ এর মাধ্যমে দুরভিসন্ধিমূলক অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছিল ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির নেওয়ার্কে যত গ্রাহক তৈরি হত, দায় তত বাড়তে থাকে।
[৫] বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাদের র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আজ তাদের গুলশান থানায় তাদের হস্তান্তর করা হবে।
[৬] বুধবার গভীর রাতে আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক গুলশান থানায় প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইভ্যালির মো. রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, গ্রাহক আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে কিছু পণ্যের অর্ডার দেন। গত ২৯ মে থেকে
১৬ জুন পর্যন্ত আরেফ বাকের বিভিন্ন সময় পণ্যের মূল্য বাবদ ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা অনলাইন ব্যাংকিং ও একটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। পণ্য ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে দিতে ব্যর্থ হলে সম্পূর্ণ টাকা ফেরতের অঙ্গীকার করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। সবশেষ ৫ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির গ্রাহকসেবা শাখায় যোগাযোগ করে পণ্য পেতে ব্যর্থ হন। এর আগে যতবার যোগাযোগ করা হয়, ততবারই তারা দেব-দি”িছ বলে টালবাহানা করে।
[৭] অভিযোগে আরও বলা হয়, ৯ সেপ্টেম্বর বাকেরসহ তিনজন ধানমন্ডির ১৪ নম্বর রোডে ইভ্যালির অফিসে যান ও প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেলের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তারা বাধার শিকার হন। পরে বাকের বন্ধুদের নিয়ে ইভ্যালির অফিসে প্রতিনিধিদের সঙ্গে পণ্যের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তারা চিৎকার-চেঁচামেচি করেন।
আপনার মতামত লিখুন :