শাহীন খন্দকার: [২] রাজধানীর শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সফি আহমেদ আরো বলেন, যতই দিন যাচ্ছে ডেঙ্গুরোগীসহ অন্যান্য শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। তিনি বলেন, প্রতিদিন যে হারে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু রোগী আসছে, শয্যা খালি না থাকায় নতুন রোগীদের ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না। গত দুইমাস ধরে এডিস মশাবাহিত, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ করোনা রোগের শিশুরাই বেশি আসছে, ফলে প্রতিদিন শতশত শিশুরোগীকে ফেরত দিতে হচ্ছে এ পরিস্থিতিতে।
[৩] বুধবার ঢাকা শিশু হাসপাতালের নিচতলায় ডেঙ্গু কর্নারে এবং তিনতলায় ডেঙ্গু ইউনিটে রোগী পরিপূর্ণ,একটি শয্যাও খালি নেই। মিরপুর-১৪ নম্বর এলাকা থেকে আসা সাত মাসের শিশু আদিয়ানকে, মা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে শিশুটির তার গায়ে জ্বর আসে। এলাকার একটি ক্লিনিকে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খাওয়ালেও লাভ হয়নি।
[৪] দুদিন পর ৯ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে এনে ডাক্তার দেখালে পরীক্ষা করার পর ১১ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট আসে শিশুটির ডেঙ্গু পজিটিভ । জানার সাথে সাথে তাকে শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শিশুটির মা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে মেয়েটি অনেক অসুস্থ। রক্তের প্ল্যাটিনেট অনেক কমে যাওয়ায় তাকে রক্তও দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মিরপুর-১৪ নম্বরে পাঁচতলা একটি বাড়ির নিচতলায় তাদের পরিবার ভাড়া থাকে। বাড়ির ভেতরের অংশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলেও বাইরে ময়লা-আর্বজনা। সেখানেই মশা বিস্তার হয়।
[৫] ঢাকা শিশু হাসপাতাল সূত্রে থেকে জানা গেছে, এ হাসপাতালে মোট ৬৩০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। গত সাতদিনে ৮৪ জন আর বৃহস্পতিবার ৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভতি আছে। আইসিইউতে রয়েছে ১০ জন। এ পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ জন মারা গেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই মিরপুরের বাসিন্দা।
[৬] এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিশু হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার বলেন, প্রতিদিন যে পরিমাণে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হতে আসছে, আমরা সবাইকে ভর্তি করতে পারছি না। হাসপাতালের সব শয্যায় রোগী ভর্তি থাকায় নতুন রোগীর জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
[৭] তিনি আরও বলেন, একদিকে করোনা তার ওপর ডেঙ্গু মহামারিতে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিজ বাসা ও আশপাশ নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বৃষ্টি যত দিন থাকবে, ডেঙ্গুর প্রকোপও থাকবে।