মাজহারুল ইসলাম : [২] ঢাকায় নিয়ে যৌনপল্লিতে ২লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বরিশাল মেট্রো পলিটন বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করে নির্যাতনের শিকার ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণী। ঢাকা পোস্ট
[৩] সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ওই তরুণী তার ফুফু, ফুফা ও চাচার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা তা আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছি। মামলা তদন্ত সাপেক্ষে এর সঙ্গে আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
[৪] নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী জানান, ১৪ মাস আগে ওই তার বিয়ে হয়। কিন্তু পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ের ২ মাসের মধ্যে তাদের বিবাহবেচ্ছেদ হয়। কিন্তু তার বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ফুফু, ফুফা এবং চাচা তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ৯ মাস আগে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে জুরাইন শনিরআখড়ার ভাড়া বাসায় তাকে রাখেন।
[৫] ওই তরুণীর অভিযোগ, চাকরির কথা বলে ঢাকায় নিলেও সেখানে গিয়ে দেখি, অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অনেক ছেলে-মেয়ে বাসায় আসা যাওয়া করে। কয়েকদিন পর ফুফু ও ফুফা মিলে আমাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেন। আমি তাতে বাধা দিলে তারা মারধর করেন। গলা চেপে, মাথা দেয়ালের সঙ্গে আঘাত করে নির্যাতন চালায়। এভাবে দীর্ঘ ৫ মাস সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায়। তখন মা-বাবার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে দিত না। যদিও বলতে দিত তাহলে তাদের শেখানো কথা বলতে হতো। সারাক্ষণ ফুফু পাশে থাকতেন।
[৬] ৪ মাস আগে তাকে অন্য আরেকজনের কাছে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। সেখানে কিছু দিন থাকার পর এক নারীর সহায়তায় পালিয়ে বরিশাল বন্দর থানার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
[৭] ওই তরুণীর বাবা বলেন, মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসার পর আমার বোন, জামাই এবং ভাই আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। তবে স্থানীয়দের সহায়তায় আমি মুক্তি পাই। আমার ভাই বলে, সাক্ষীকে মেরে ফেলতে হবে। মেয়েকে জীবিত রাখলে আমরা বিচার চাইব। এ জন্য তাকে মেরে ফেলা উচিত। আমার মেয়ের সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে তার কঠিন বিচার চাই।
[৮] তরুণীর মা বলেন, ফুফু হয়েও ভাইয়ের মেয়েকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেবে এটা বুঝতে পারিনি। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তারা আমার আপন দুই ননদকেও বিক্রি করে দিয়েছে। তাদের দেশের বাইরে পাচার করে দিয়েছে। সেখানে জীবন বাঁচাতে তারা পুলিশের হাতে ধরা দিয়েছে। ওই তরুণীর মা আরও বলেন, তারা মানবপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত। তাদের মূল ব্যবসা হচ্ছে মানুষ বিক্রি করা এবং মেয়েদের দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা।
[৯]যদিও অভিযুক্ত দাবি করেছেন, আমার ভাইয়ের মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে কোনো খারাপ কাজ করায়নি। তার বাবার কাছে ট্রলার বিক্রির দুই লাখ টাকা পাব। সেই টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য এমন অভিযোগ করেছেন। যখনই পাওনা টাকা চাই তখনই তিনি মামলা দেওয়ার কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, যদি দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে থাকি তাহলে দুই মাস আগে ঢাকা থেকে এসে থানায় মামলা দেওয়ার কথা। কিন্তু আমি ৪-৫দিন আগে বাড়ি এসে টাকা চাওয়ায় তারা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :