মাছুম বিল্লাহ: [২] ভারতের স্বাধীনতাকামী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অরগানাইজেশন (কেএলও) বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চল, নেপালের কিছু অংশ এবং পশ্চিমবঙ্গের সাত জেলা, বিহারের কিষাণগঞ্জ অঞ্চল, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা নিয়ে ‘স্বাধীন কামতাপুর রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানিয়েছে। দাবি না মানলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চালানোর হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কেএলওর প্রধান জীবন সিংহের পক্ষ থেকে এক ভিডিও বার্তায় এমন দাবি তোলা হয়।
[৩] হিন্দি দৈনিক জাগরণের এক খবরে বলা হয়েছে, ইতিহাসে উল্লেখ থাকা কোচবিহার রাজ্যের যে সীমানা ছিল, তা মেনেই কামতাপুর রাষ্ট্র গঠন করা হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে সংগঠনটির প্রধান শত্রু হিসেবে ভারতের নাম উল্লেখ করেছে কেএলও। কেএলও একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন হিসেবে পরিচিত। গোপনে তৎপরতা চালানো এই দলটিকে ভারত সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
[৪] এর আগে গত ১৯ জুন পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা রাজ্যটির উত্তরাঞ্চলের সাতটি জেলা নিয়ে আলাদা রাজ্য গড়ার কথা সামনে আনেন। অঞ্চলটি বহুদিন ধরেই বঞ্চনার শিকার হয়েছে উল্লেখ করে আলাদা ‘উত্তরবঙ্গ’ রাজ্যের দাবি জানান তিনি। তবে সেই দাবি নাকচ করে দেয় বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
[৫] এক দিন পর ২১ জুন পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুরা জেলার বিষ্ণুপুর আসনের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ‘জঙ্গলমহল’ নামের একটি রাজ্য গড়ার দাবি জানান। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুরা, পশ্চিম মেদিনীপুর আর ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তৃর্ণ জঙ্গল এলাকা জঙ্গলমহল নামে পরিচিত। এই জঙ্গলমহলকে তুলনামূলক অনুন্নত এলাকা হিসেবে ধরা হয়। সৌমিত্র খাঁর ভাষ্য, মণিপুর ও মিজোরাম ছোট রাজ্য হিসেবে উন্নয়ন করছে। তবে উন্নয়নের জন্য জঙ্গলমহল রাজ্য হবে না কেন?
[৬] বিজেপি সাংসদদের আলাদা রাজ্য গড়ার দাবির বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস ও বামদলের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে। কোনোভাবেই বাংলা ভাগ হতে দেবেন না। এসব দাবি খারিজ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
[৭] এদিকে দার্জিলিং ভেঙে আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার দাবি তুলেছে গোর্খা লীগ। গত শতকের আশির দশকে গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে জিএনএলএফ নেতা সুভাষ ঘিসিং প্রথম আন্দোলন শুরু করেন। এরপর প্রায় চার যুগ কেটে গেলেও পুরোপুরি শান্তি ফিরে আসেনি। একই ধারায় গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলন এখনো চলছে।