সুজন কৈরী: [২] ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় অভিনব কায়দায় প্রতারণার অভিযোগে চক্রের দলনেতাসহ দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা জেলা।
[৩] গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আল আমিন (৩৫) ও শাহজাহান সিরাজ (৪৬)। তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ওমানি মুদ্রা, বাংলাদেশি টাকা ও সিএনজি জব্দ করা হয়েছে।
[৪] শনিবার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিমের খালপাড় সংলগ্ন সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস অফিসের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
[৫] পিবিআই জানায়, গত ২৩ আগস্ট জনৈক লুৎর্ফ রহমান বাসা থেকে বের হয়ে তার বড় ভাই ব্যাংক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। ওইদিন দুপুরে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ভাইয়ের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা নিয়ে ফিরছিলেন। পথে কদমতলী চৌরাস্তায় জাহিদ মার্কেটের সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সিএনজির চালক তাকে স্যার বলে সম্বোধন করে ডাক দেয়। তিনি সিএনজির কাছে গেলে চালক তাকে কয়েকটি বিদেশি মুদ্রার নোট দেখিয়ে কোথায় একচেঞ্জ করা যাবে জানতে চায়। লুৎর্ফ রহমান ড্রাইভারকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাঙ্গানো যায় বলে জানান। চালক তাকে ২০-২৫টি বিদেশি কারেন্সী দেখায় এবং ভাঙ্গানো হলে কতো টাকা পাওয়া যাবে জানতে চায়। তখন সিএনজি’র কাছে অজ্ঞাতনামা আরো ২ জন ব্যক্তি আসেন এবং লুৎর্ফ রহমানের পাশে দাঁড়ান। তাদের একজন ব্যাংকে চাকরি করেন এবং অপরজন মানি এক্সচেঞ্জে চাকরি করেন বলে জানান।
[৬] তারা জানান, বিদেশি টাকাগুলো অনেক দামি এবং ওমানী কারেন্সী নোট। মানি এক্সচেঞ্জের দোকানে ভাঙ্গালে অনেক টাকা পাওয়া যাবে। তাদের একজন তখন লুৎফর রহমানকে দেখিয়ে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সিএনজি চালকের কাছ থেকে ৪টি নোট কিনে নেন এবং লুৎফর রহমানকে নোট কিনতে প্রলুব্ধ করেন। সিএনজি চালকের কাছে আরও ২০-২২টি নোট রয়েছে এবং এই নোটগুলোর বর্তমান বাজারমুল্য প্রতিটি ২২ হাজার টাকা বলে জানান। তাদের কথায় বিশ্বাস করে লুৎফর রহমান সিএনজি ড্রাইভারকে নগদ ২ লাখ টাকা দিয়ে ২০টি ওমানী কারেন্সী নোট নেন। তখন সিএনজি ড্রাইভারসহ অজ্ঞাত ২ জন ব্যক্তি সিএনজিতে করে দ্রুত বাবু বাজারের দিকে চলে যান।
[৭] পরেবর্তিতে লুৎফর রহমান জানতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি ২৭ আগস্ট দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন
[৮] পিবিআই আরও জানায়, সিডিউলভুক্ত হওয়ায় পিবিআই ঢাকা জেলা স্ব-উদ্দোগে মামলাটির তদন্ত গ্রহণ করে।
[৯] রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই হেডকোয়ার্টারে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার ঢাকা জেলার এসপি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, গ্রেপ্তার আল-আমিন এই প্রতারক চক্রের দলনেতা। তারা দীর্ঘদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিনব কায়দায় বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারীদেরকে পর্যবেক্ষনে রেখে তাদের পিছু নিতো। পরে সুকৌশলে তাদের টার্গেট ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশের কারেন্সী নোট দেখিয়ে বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যেতো।
[১০] তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রতারণার মাধ্যমে জনৈক লুৎফর রহমানের কাছ থেকে নগদ দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় আল-আমিনের কাছ থেকে ১০০ ভায়েসার ৪০টি ওমানী মুদ্রা ও নগদ ১০ হাজার টাকা এবং শাহজাহানের কাছ থেকে ১০০ ভায়েসার ১৮টি ওমানী মুদ্রা ও নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :