স্বপন দেব: [২] মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়নের ভাড়াউড়া চা বাগানের বালিশিরা ভ্যালীর সভাপতি ও শ্রমিক নেতা বিজয় হাজরার পরিবারের উপর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশিরা অতর্কিত হামলায় চালায়। এতে বিজয় হাজরার স্ত্রী রুপবতী হাজরা (৫০) মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন বিজয় হাজরার ছেলে সাধন হাজরা (৩০) ও ছেলের বউ সাথী হাজরা (২৫)। বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে।
[৩] জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানে বিজয় হাজরার পরিবারের সাথে একই এলাকার প্রতিবেশি লাল বাহাদুর, ধন বাহাদুর ও আশু বাহাদুরদের সাথে রাস্তায় গোবর ফেলাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাক্যে বিনিময় হয়। ঘটনার পরিপেক্ষিতে বিজয় হাজরার ছেলে সাধন হাজরা অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন ধরেই সাধারণ নানাবিধ কারনে লাল বাহাদুরের পরিবার আমাদের সাথে বিবাদ করতে আসে। গত (বুধবার) ৪ টার দিকে লাল বাহাদুর মদ্যপ হয়ে আমাদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের পরিবারের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি শুরু করলে একপর্যায়ে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে লাল বাহাদুরকে বাঁধা দেই৷
[৪] তখন চিৎকার শুনে লাল বাহাদুরের পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও লাল বাহাদুরের আরো দুই ভাই লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার উপর অতর্কিত হামলা করে আমার মাথায় দা দিয়ে কোপ দেয়৷ তখন ঘটনাস্থল থেকে আমার আত্নচিৎকারে আমার মা ও স্ত্রী আমাকে বাঁচাতে ছুটে আসলে আমার মা ও স্ত্রীর উপরও হামলা চালায় লাল বাহাদুর ও তার দুই ভাই। এতে আমার মায়ের মাথায় ও শরীরে গুরুতর আঘাত করে। মাথায় আঘাত করার সাথে সাথে আমার মা মাটিতে লুটিয়ে পরেন৷ পরে আমাদের চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আসলে লাল বাহাদুর ও তার দুই ভাই পালিয়ে যায়৷
[৫] আহত অবস্থায় স্থানীয় প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় আমরা শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেই, কিন্ত আমার মায়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মাকে জরুরী ভাবে শ্রীমঙ্গল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে হাসপাতালের করোনারী কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (৪ আগস্ট) রাত ১০ টার দিকে আমার মা রুপবতী হাজরা মারা যান।
[৬] শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুছ ছালেক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এই ঘটনায় থানায় ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের করা হয়েছে (মামলা নং ৫) এবং এজাহার ভুক্ত ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।