শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:৪০ দুপুর
আপডেট : ০৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:৪০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী: শেখ কামাল ছিলেন প্রতিভাবান ও সুদক্ষ সুসংগঠক

দীপক চৌধুরী: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ক্রীড়া সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৯ সালের এ দিনে তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাত্রি এলো। মাত্র ২৬ বছর বয়সে জাতির পিতার হত্যাকারী মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করলেন তিনি।

শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত নেতা ছিলেন। ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি আমাদের দেশে নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।

অনন্য প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্তপ্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন। তিনি বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তাঁর। উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি ।

আমরা জানি, ১৯৭৫ সালের আগস্টের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কুশীলবেরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে কাজ শুরু করে। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমল থেকে ক্ষমতাসীন সরকার দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের মাধ্যমে রাজনীতিকে নষ্ট করে। যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১টি বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়।

জাতির পিতার সুযোগ্যকন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান। নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেন। সত্যিটা হলো, জিয়ার আমলেই রাজনীতিকে চরিত্রহীন করা হয়, নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়। রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিকে মেনে নেওয়ার প্রবণতা জোরদার হতে শুরু করে তার আমলেই। লুটপাট, দুর্নীতি আর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস জাতিকে কলঙ্কিত করে। জিয়াউর রহমানের পর তারই ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচারী এইচ এম এরশাদের আমল থেকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক উভয় প্রকারের দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন করে। গত খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে অর্থনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ে। খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্রের নেতাদের সংসদে বিরোধীদলের নেতার আসনে বসিয়ে জঘন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেন। যদিও পুরনো কথা তবু হাজার বার বলা যায় ইতিহাসের এ সত্য যে, খুনিচক্রকে রক্ষা করেন জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকার।

১৯৭৫ থেকে ২০২১ এই সুদীর্ঘ সময় এদেশের নানা প্রতিকূল পরিবেশেও কোনো ভয় বা অপশক্তি তাঁর মাথা নোয়াতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবরকম সুখ-আনন্দ-ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে এদেশের মানুষের কাতারে দাঁড়িয়েছেন। জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়ার আমলে দেশের মানুষের যেখানে কোনো অধিকার ছিল না সেটি তিনি ফিরিয়ে আনতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। সক্ষম হয়েছেন।

লেখক : উপ-সম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, কলামিস্ট ও কথাসাহিত্যিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়