নিউজ ডেস্ক: গত এক বছর আগেও সরকারের গুদামে চালের মজুদ ছিলো প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন, এখন সেই মজুদ বেড়ে ১৪ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে।
গত বছরের তুলনায় কেবল চালের মজুদ বেড়েছে ৪ লাখ মেট্রিক টন। তবে খাদ্যের এই বাড়তি মজুদ চিকন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। বাংলাদেশ প্রতিদিন
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ২৭ জুলাইয়ের বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে নাজিরশাইল ও মিনিকেট জাতীয় সরু চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ১৯ জুলাই বাজারে মিনিকেটের দাম ছিল কমবেশি ৬৫ টাকা, যা ২৭ জুলাই বেড়ে ৬৮ টাকা হয়েছে। আর নাজিরশাইল চালের দাম গত এক সপ্তাহে কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা থেকে ৭২ টাকায় ওঠেছে।
এই বাজারমূল্যের নিচে খাদ্য মন্ত্রণালয় মন্তব্য করেছে, গত এক সপ্তাহে ঢাকার বাজারে সরু ও মাঝারি চালের পাইকারি ও খুচরামূল্য উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটাচালের খুচরামূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আজ খাদ্য, কৃষি ও বাণিজ্য এই তিন মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ওই সভায় চালের ওপর আরোপিত আমদানি কর কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব উপস্থাপনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
বিষয়টি স্বীকার করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, চিকন চালের দাম কিছুটা বাড়তি মনে হচ্ছে। এটি আমাদের নজরে রয়েছে। তবে মোটাচালের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল আছে। বিষয়টি নিয়ে অনলাইন বৈঠক রয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চালের ওপর আরোপিত আমদানি কর কমানোর প্রস্তাব পাঠাতে যাচ্ছি। সংশ্লিষ্টরা জানান, লাগামহীন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে এর আগে গত জানুয়ারিতে আমদানিতে ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কৃষককে সুবিধা দিতে ওই সুবিধা ছিল সীমিত সময়ের জন্য। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই ট্যাক্স মওকুফ সুবিধা কার্যকর ছিল। এখন বোরো আবাদ থেকে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ শেষের পথে। মজুদও রয়েছে যথেষ্ট। তারপরও চিকন চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
মোটাচালের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কৃষি বিপণণ অধিদফতরের তথ্যে গত এক সপ্তাহে চিকনচালের খুচরামূল্য বেড়েছে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। খাদ্য সচিব জানান, দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে খাদ্য আমদানি বাড়ানো হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংগ্রহে যথেষ্ট তৎপড়তা রয়েছে সরকারের। উপরন্তু গত ২৫ জুলাই থেকে খোলাবাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে মোটা চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। ৭ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের এই বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি চলবে। তবে মোটাচাল দিয়ে চিকনচালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এখন দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ চিকন চাল কিনতে চায়। অতিরিক্ত চাহিদার কারণেও দাম বেড়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনে বেসরকারি খাতে চিকন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :